পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

—পাঁচ—

 নিকোলাই কিছু মিথ্যা বলেনি,—পেভেলের বাড়িটা সমস্ত পল্লির ভীতি, আতঙ্ক এবং সন্দেহের কেন্দ্র হ’য়ে পড়লাে। চারপাশে সময়ে-অসময়ে নানান প্রকৃতির লােক নিঃশব্দে ঘু’রে বেড়ায়—বাড়ির গােপন রহস্য ভেদ করবে ব’লে। তাড়িখানার মালিক··· বুড়ো একদিন মাকে পথে পেয়ে বললাে, কেমন আছাে গাে? তােমার ছেলের খবর কি? বিয়ে দিচ্ছ না কেন? বিয়ে দিয়ে দিলেই তােমাদের পক্ষে মঙ্গল। আর বিয়ে হলে মানুষ ও সামাল থাকে। আমি হ’লে কবে বিয়ে দিয়ে দিতুম। কী দিন-কাল পড়েছে বােঝতো···‘মানুষ’ নামধেয় পশুটির ওপর এখন কড়া নজর রাখা দরকার। মানুষ এখন মগজ খাটিয়ে বাঁচতে চায়, চিন্তা ক’রে ক’রে তারা উচ্ছৃঙ্খল হ’য়ে উঠেছে। এমন-সব কাজ করছে, যা দস্তুরমতাে অন্যায়। গির্জায় যায় না, মেলায়-মহোৎসবে যােগ দেয় না, খালি আনাচে-কানাচে ব’সে দল পাকায় আর ফিস-ফাস করে। এতে ফিসফাস কেন বাপু?

 ফিস-ফাস না করে খােলাখুলি তাড়িখানার লােকেদের সামনে দাঁড়িয়ে বলুক না—সে সাহস নেই। আমি জানতে চাই, কি এ? গােপনীয়? গােপনীয় স্থান একমাত্র পবিত্র গির্জা···অন্য-সব কোনায় ব’সে কানাঘুষ্ ঘুষি ভ্রান্তি, মায়া, বুঝলে···

 লম্বা বক্তৃতা শেষ করে বুড়াে চলে গেলাে। মা বিব্রত হ’য়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। এরপরে সাবধান করে গেলাে এক পড়শী বুড়ি। মা বাড়ি এসে ছেলেদের সব খুলে বললেন—তোরা বিয়ে করছিস না,

৩৬