পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

মাখোটিন, ভিয়ালভ এবং আরো পাঁচ ছ’জন পাণ্ডা একটা পুরানো লৌহস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে হাত দুলিয়ে জনতাকে উত্তেজিত করছে;— সবার চোখ তাদের দিকে। হঠাৎ কে একজন চেঁচিয়ে উঠলো, পেভেল এসেছে।

 পেভেল? নিয়ে এসো।

 তৎক্ষণাৎ পেভেলকে ধ’রে ঠেলে নিয়ে যাওয়া হ’ল। মা একা পেছনে পড়ে রইলেন।

 চারদিকে কেবল শব্দ হ’তে লাগলো, চুপ, চুপ! অদূরে রাইবিনের গলা শোনা গেলো,···আমরা দাঁড়াব কোপকের জন্য নয়—ন্যায়ের জন্য। কোপেকের গায়ে যে অজচ্ছল রক্ত মাখানো, তার জন্য...

 জনতার কানে বেশ জোরে গিয়ে এ কথাটা পড়লো—সঙ্গে সঙ্গে জেগে উঠলো উত্তেজনাপূর্ণ চীৎকার, সাবাস রাইবিন, ঠিক বলেছ।

 আঃ, চুপ্‌ করনা।

 পেভেল এসেছে।

 সবগুলি কণ্ঠ একত্র মিলে সৃষ্টি হ’ল একটা তুমুল কোলাহল, সকলের শব্দ, বাষ্পের ফোঁসফোঁসানি, চামড়ার বেল্টের হাওয়াজ, সব তাতে ডুবে গেলো। চারদিক থেকে লোক ছুটে আসছে, হাত দোলাচ্ছে, তর্কাতর্কি করছে, তিক্ত তীক্ষ্ণ ভাষায় পরস্পরকে ক্ষেপিয়ে তুলছে। যে বেদনা এতদিন বের হবার কোন পথ পায়নি, শ্রান্ত বুকে চাপা রয়েছে, আজ তা’ জেগে উঠেছে, বের হতে চাচ্ছে, মুখ থেকে ফেটে পড়ছে বাক্যবাণে। আকাশে উঠছে বিরাট এক পাখীর মতো বিচিত্র পাখা দুলিয়ে, জনতাকে নখে জড়িয়ে টেনে-হিঁচড়ে, পরস্পর ঠোকাঠুকি ক’রে;—রোষ-রক্তিম অগ্নিশিখার মতো জীবন নিয়ে উদ্দীপ্ত হ’য়ে

৫২