পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/৪৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মা

উঠেছে। জনতার মাথার উপর ধূলি এবং ধোঁয়ার কুণ্ডলী···সবার মুখে আগুন জ্বলছে, গাল বেয়ে পড়ছে ঘাম, কালো কালো ফোঁটায়—কালো মুখের মধ্য দিয়ে চোখ জ্বলছে, দাঁত চক্‌চক্ করছে।

 শিজভ, মাখোটিন যেখানে দাঁড়িয়ে, সেখানে উঠে দাঁড়ালো পেভেল, তার কণ্ঠ থেকে ধ্বনিত হ’ল, কমরেড:

 কথাটা উচ্চারণ করার সঙ্গে সঙ্গে পেভেলের মধ্যে জাগলো একটা অদম্য আত্মপ্রত্যয়, সংগ্রামেচ্ছা, জনতার কাছে হৃদয় খু’লে ধরার আগ্রহ।

 ‘কমরেড’—কথাটা তাকে আনন্দে, শক্তিতে উদ্বুদ্ধ ক’রে তুললো। ‘আমরা মজুররা গির্জা এবং কারখানা গড়ে তুলি, শৃঙ্খল বানাই, মুদ্রা তৈরি করি, পুতুল গড়ি, কলকব্জা নির্মাণ করি···আমরা সেই জীবন্ত শক্তি, যা’ আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত দুনিয়াকে বাঁচিয়ে রাখে—আহার এবং আনন্দ জুগিয়ে। সর্বকালে, সর্বস্থানে, কাজ করার বেলায় আমরাই সবার প্রথমে কিন্তু জীবনের অধিকারে সেই আমরাই সর্বপশ্চাতে। কে কেয়ার করে আমাদের? কে আমাদের ভালো করতে চায়? কে আমাদের মানুষ ব’লে স্বীকার করে?—কেউ না।

 জনতাও প্রতিধ্বনি ক’রে উঠলো, কেউ না।

 শান্ত, সংযত, গম্ভীর, সরল ভাষায় পেভেল বক্তৃতা দিতে লাগলো। জনতা ধীরে ধীরে তার কাছে ঘিঁষে এক কালো ঘন সহস্র-শির বপুর মতো হ’য়ে দাঁড়ালো, তাদের শত শত উৎসুক চোখ পেভেলের দিকে নিবদ্ধ। পেভেলের কথাগুলো যেন তারা নির্বাক আগ্রহে গিলছে। পেভেল বলতে লাগলো, শ্রেষ্ঠতর জীবন আমরা কিছুতেই লাভ করতে পারব না ততদিন—যতদিন না আমরা উপলব্ধি করি, আমরা কমরেড,

৫৩