পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

 এণ্ড্রি মার কাছে সবিস্তারে জেলের দৈনিক জীবনযাত্রাকাহিনী বর্ণনা করে যায়। মা একটু আশ্বস্ত হন, তারপর বলেন, আজ কি করেছি জানো?···

 কি?

 মা ইস্তাহার-বিলির কাহিনী বলেন। এণ্ড্রি উল্লসিত হ’য়ে বললো, চমৎকার, মা! এতে যে আমাদের কাজ কতটা এগিয়ে গেলো, কতো সুবিধা হ’ল, তা’ বোধ করি তুমি নিজেও বোঝোনি!

 মায়ের প্রাণ···একটুকুতেই খুলে যায় স্নেহাকাঙ্ক্ষী সন্তানের কাছে। এণ্ড্রির কাছেও মা তাঁর করুণ জীবনকাহিনী বিবৃত করে বলেন: স্বামীর মৃত্যুর পর ছেলের মুখ চেয়ে রইলুম! সেই ছেলে যখন বাপের মতো বিপথে পা দিলো, তখন কত যে ব্যথা পেলুম প্রাণে, তা’ তোমায় কেমন ক’রে বোঝাবো, এণ্ড্রি? জানি, আমার এ ভালোবাসা স্বার্থ-দুষ্ট, সংকীর্ণ—তোমরা আজকালকার ছেলেমেয়েরা যেমন পরের জন্য দুঃখ বরণ করে নাও, আমি তো তা পারিনে! আমি আমার নিকট-আত্মীয়দের ভালোবাসি, পেভেলকে ভালোবাসি, তোমাকে ভালোবাসি—বোধহয় পেভেলের চাইতেও বেশি···পেভেল বড় চাপা···আমাকে কিছু বলে না। শশেংকাকে বিয়ে করতে চায়—আমি মা, আমাকে একথাটাও জানালোনা।

 এণ্ড্রি বললো, এ সত্যি নয় মা,—আমি জানি এ সত্যি নয়! পেভেল শশেংকাকে ভালোবাসে একথা ঠিক, কিন্তু বিয়ে করতে চায় না, বিয়ে করতে পারেনা, বিয়ে করবেনা।···

 বিষণ্ণ চোখে মা বললেন, হাঁরে, এমনি ক’রে কি তোরা নিজেদের বলি দিবি?

৬৯