পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

বােঝা হালকা করার জন্যই তারা তুচ্ছাতিতুচ্ছ বিষয়টি নিয়েও হানাহানি করে হিংস্র পশুর মতাে···কখনাে আহতাঙ্গ হয়, কখনাে মরে। এই প্রচ্ছন্ন হিংস্রতা ধীরে ধীরে বেড়ে চলে জীবনে। তারা জন্মে আত্মার এই পীড়া নিয়ে। এ তাদের পিতৃধন। কালাে ছায়ার মতাে কবর পর্যন্ত লেগে থাকবে সঙ্গে···জীবনকে করবে উদ্দেশ্যহীন, নিষ্ঠুরতা এবং পাশবিক উত্তেজনায় কলঙ্কিত!

 চিরকাল···বছরের পর বছর···জীবন-নদী ব’য়ে এসেছে এম্‌নি ধারায়। মন্থর, একঘেয়ে তার গতি···পঙ্কিল তার স্রোত। দিনের পর দিন তারা একই কাজ করে চলে রুটিনের মতাে···জীবনের এ ধারা বদলাবার ইচ্ছে বা অবসর যেন কারাে নেই।

 নতুন কেউ যখন পল্লিতে আসে, নতুন বলেই দু’চারদিন সে তাদের কৌতুহল উদ্রেক করে। তার কাছে ভিন্-মুলুকের গল্প শােনে, সবাই বােঝে, সর্বত্রই মজুরের ঐ এক অবস্থা। নবাগতের ওপর আর কোন আকর্ষণ থাকে না।

 মাঝে মাঝে কোন নয়া লােক এসে এমন-সব অদ্ভুত কথা বলে যা’ মজুর-পল্লিতে কেউ কখনাে শােনেনি। তারা তার কথা কান পেতে শোনে···বিশ্বাসও করে না, তর্কও করে না। কারাে মধ্যে জেগে ওঠে অন্ধ বিক্ষোভ, কেউ হয় ভীত বিব্রত, কেউ হয়ে ওঠে এক অজানা লাভের ক্ষীণ সম্ভাবনায় চঞ্চল। তারা পানের মাত্রা চড়িয়ে দেয়, যাতে এই অনাবশ্যক বিরক্তিকর উত্তেজনা ঝেড়ে ফেলতে পারে। নবাগতকে যেন তারা ভয়ের চোখে দেখে···সে হয়তাে তাদের মধ্যে এমন-কিছু এনে ফেলবে যা’ তাদের সহজ জীবন-স্রোতে তীব্র আলােড়নের সৃষ্টি ক’রবে। তারা আশাই করেনা যে তাদের অবস্থারও আবার উন্নতি হ’তে পারে!

১১