পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

ঘৃণা করি, তাই তাদের ছেড়ে যাবো না। তাদের পথ রোধ করে দাঁড়াবো, তাদের জ্বালিয়ে মারবো আজীবন। তারা আমার শত্রুতা করেছে, আমিও তাদের শত্রুতা করব! কৈফিয়ৎ যদি দিতে হয় তো দেব আমার নিজের কাজের কৈফিয়ৎ। আমার বাবা বদি চোর হয়··· বলতে বলতে থেমে গেলো নিকোলাই। তারপর হঠাৎ উষ্ণ হ’য়ে ব’লে উঠলো, আইছে-গবর্ভব ব্যাটার মুণ্ডু ছিঁড়ে ফেলব, দেখে নিয়ো।

 এণ্ড্রি ব্যগ্র-কৌতূহলে বললো, কেন বলো তো?

 ব্যাট। স্পাই, লোকের সর্বনাশ ক’রে বেড়াচ্ছে। ব্যাটার জন্য আজ আমার বাবা পর্যন্ত স্পাই হবার মতলব করছেন।

 এণ্ড্রি বুঝলো, নিকোলাইর প্রাণে কী মর্মন্তুদ ব্যথা, কী অসহ্য যাতনা—এর সান্ত্বনা নেই। যুক্তিতে এ প্রশমিত হয় না, শুধু বললো, ভাই, আমরাও ভুক্তভোগী, আমরাও একদিন অমনি ক’রে ভাঙা কাঁচ মাড়িয়ে রক্তাক্ত পদে চলেছি জীবন-পথে, অন্ধকারে আমরাও অমনি আলোর জন্য হা-হা করেছি।

 নিকোলাই বললো, তুমি আমায় বোঝাতে চেয়ো না, বন্ধু, বোঝাবার কিছু নেই। আমার বুকে হাত দিয়ে দেখো—মনে হচ্ছে যেন ক্ষুধার্ত ক্রুদ্ধ নেকড়ের দল গর্জন করছে।

 এণ্ড্রি বলে, একদিন এ দূর হ’বে—সম্পূর্ণভাবে না হলেও, হবে। শিশুর হামের মতো এও মানুষের একটা ব্যাধি। সবাই আমরা এতে ভুগি। যারা শক্তিমান্ তারা ভোগে বেশি। যারা দুর্বল, তারা ভোগে কম। এ ব্যাধি কখন আসে, জানো? যখন মানুষ নিজেকে চিনেছে কিন্তু জীবনের পূর্ণ পরিচয় পায়নি, জীবন-যাত্রায় নিজের স্থান খুঁজে পায়নি। তা না পেয়ে নিজের দামও কষতে পারেনি। তখন তার

৮৪