পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

যাবার পরও সে থাকে। একা এণ্ড্রির মুখোমুখি প্রশ্ন করে, কিন্তু মানুষ যে আজ সর্বহারা, তার জন্য সব চেয়ে বেশি দায়ী কে—জার?

 এণ্ড্রি বলে, দায়ী সেই, যে প্রথম উচ্চারণ করেছিল, ‘এই আমার জিনিস।’ কিন্তু সে লোকটা মারা গেছে বহু হাজার বছর— তার ওপর রাগ ঝাড়বার উপায় নেই।

 কিন্তু ধনী আর তাদের মুরুব্বীরা— তাদের কথা কি বলছ? তারা কি নির্দোষ?

 এণ্ড্রি তার জবাবে বহু যুক্তিপূর্ণ কথা বলে,—নিকোলাইর মন প্রসন্ন হয় না। সাধারণ মানুষও যে সব দোষের সঙ্গে জড়িত, একথাটা তার মন মানতে চায় না। একদিন সে বলে, দুনিয়া থেকে ঐ দুষ্ট আগাছাগুলোকে নির্দয়ভাবে চষে ফেলতে হ’বে আমাদের।

 মা বলেন, আইছেও এম্‌নি কথা বলেছিল।

 স্পাই আইছের নাম শুনে মুহূর্তে নিকোলাইর মন কঠিন হ’য়ে উঠলো। বললো, একজন দোষী ঐ। ব’লে চ’লে গেলো।

 এণ্ড্রি বললো, সত্যিই আইছে বড় বেড়ে উঠেছে, মা। রাতদিন ও লোকদের ধরিয়ে দেবার মতলবে ঘরের আনাচে-কানাচে ঘুরছে। নিকোলাই একদিন ওকে ধ’রে আচ্ছা মতো দিয়ে দেবে। কর্তারা জনসাধারণের মন কী পর্যন্ত বিষিয়ে তুলেছে দেখ। নিকোলাইর মতো লোকেরা যখন অন্যায়ের অত্যাচারে ধৈর্য হারাবে, তখন কী ভীষণ ব্যাপার হবে! পৃথিবী হবে রক্ত-রঞ্জিত, আকাশেও যেয়ে সে রক্তের ছোপ লাগরে ৷


 একদিন অকস্মাৎ পেভেল এসে হাজির হ’ল। মার বুক আনন্দে উদ্বেল হ’য়ে উঠলো। মা এণ্ড্রিকে ডাকলেন। তিন জনে প্রাণ খুলে

৮৭