পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

 মার চোখ সজল হ’য়ে এলো। পেভেল মার হাত ধরে বললো, আমায় এযে করতেই হবে, মা। এতেই আমার সুখ, তুমি কি এতে বাধা দেবে, মা!

 না, বাধা দেবো না—মা ধীরে ধীরে বলেন।

 তাঁর বিষণ্ণ দৃষ্টি পেভেলের চোখ এড়ালোনা, বললো, দুঃখ করো না, মা, এতে তো আনন্দ করা উচিত। কবে আমাদের দেশে তেমন মা হবে, যাঁরা হাসিমুখে ছেলেদের মৃত্যুর মুখে তুলে দেবেন?

 এণ্ড্রি চিমটি-কাটার মতো ক’রে বললো, ওহে, একটু আস্তে আস্তে চালাও...

 মা বললেন, না, তোমায় আমি বাধা দেবো না, পেভেল, কিন্তু কান্না...আমি কেমন ক’রে রোধ করব···আমি যে মা...

 এক রকমের ভালোবাসা আছে, যা মানুষের সমস্ত জীবনটাকে মাটি করে দেয়। তীক্ষ্ণ কণ্ঠে এই কথা ব’লে পেভেল মার কাছ থেকে সরে যায়।

 মা কেঁপে উঠলেন। পেভেল পাছে আরো এমনি নিষ্ঠুর আঘাত দেয়, সেই আশঙ্কায় তিনি বলেন, বাধা দেবো না, পেভেল, বাধা দেবো না। আমি বুঝি, সঙ্গীদের জন্য আজ তোকে একাজ করতেই হবে।

 পেভেল বললো, সঙ্গীদের জন্য নয়, তাদের জন্য হ’লে না ক’রেও পারতুম। এ আমার নিজের জন্য দরকার।

 মা চ’লে গেলেন। এণ্ড্রি দরজার গোড়ায় দাঁড়িয়ে সব শুনছিলো। এবার এগিয়ে এসে মায়ের ওপর পেভেলের অনাবশ্যক রূঢ়তার প্রতিবাদ করলো, বললো, এমন স্নেহময়ী মায়ের ওপর এমন আস্ফালন করার কোনই দরকার ছিল না, ওর এক কাণাকড়িরও কদর নেই।

 পেভেল নিজের ভুল বুঝতে পেরে মার কাছে ক্ষমা চাইলো, অবুঝ ছেলেকে ক্ষমা কর, মা।

৯১