পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

 এণ্ড্রি বললো, গর্ব করা উচিত নয় কিন্তু সত্যিই আমরা এক নবজীবনের আস্বাদ পাচ্ছি এখন। এ জীবন খাঁটি, মনুষ্যোচিত, প্রেমে, মঙ্গলে পরিপূর্ণ।

 পেভেল মার দিকে চেয়ে বললো, হাঁ।

 মা বললেন, জীবনের ধারা যেন বদলে গেছে। আজ এসেছে নতুন রকমের দুঃখ, নতুন ধরণের আনন্দ। তা যে কী, তা জানি নে, বুঝি নে, ব্যক্তও করতে পারিনে ভাষায়।

 এণ্ড্রি বললো, এই তো হওয়া উচিত। দুনিয়ার দিকে নজর দিয়ে দেখো, মা, একটা নতুন প্রাণের জন্ম হচ্ছে, একটা নতুন প্রাণ জীবনকে নিয়ন্ত্রিত করছে! এতকাল সকল প্রাণ ছিল স্বার্থের সংঘাতে নিপীড়িত, অন্ধলোভে জ্বর-জ্বর, হিংসা-বিদ্বেষে ভারাক্রান্ত, মিথ্যা-ভীরুতা-হীনতায় দুষিত, রোগজীর্ণ, শঙ্কিত-জীবন, কুহেলির যাত্রী,—নিজের ব্যথাভারে ক্রন্দনোন্মুখ,—হঠাৎ তারি মধ্য থেকে জেগে উঠেছে এক নতুন মানুষ, যুক্তির আলোকে জীবনকে সে আলোকিত করেছে। মানুষকে ডেকে বলছে, ওগো পথ-ভ্রান্ত বন্ধুর দল, আজ দিন এসেছে এ সত্য উপলব্ধি করার যে, তোমাদের সবার স্বার্থ এক, তোমাদের প্রত্যেক মানুষের বাঁচবার দরকার আছে, বাড়বার দরকার আছে। আজও সে একা, তাই কণ্ঠস্বর তার এতো তীব্র। তার আহ্বানে খাঁটি কর্মীরা একপ্রাণ হ’য়ে দাঁড়ায়, বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করে নব বাণী, হে আমার দেশ-বিদেশের বন্ধুগণ, তোমরা মিলিত হ’য়ে এক মানরগোষ্ঠী গঠন কর! তোমাদের জীবনের প্রসূতি প্রেম—ঘৃণা নয়। আমি শুনতে পাচ্ছি, বিশ্বময় আজ সেই বাণীই প্রতিধ্বনিত···রাতে বিছানায় শুয়ে···একা জেগে···সর্বত্র এই বাণী শুনি, আর প্রাণ নেচে ওঠে। দুঃখ, অন্যায়ের ভারে প্রপীড়িতা এই

৯৩