পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

করতে হবে। প্রাণ দেওয়া, ব্রতকল্পে জীবন উৎসর্গ করা—সে তো সোজা। আরো চাই, আরো দাও। তাই দাও, যা’ তোমার জীবনের চাইতেও প্রিয়। তখনই তুমি দেখবে, জীবনের প্রিয়তম বস্তু যে সত্য, তার অদ্ভুত জীবনী-শক্তি।

 ঘরের মাঝখানে সে স্থির হ’য়ে দাঁড়ালো। তারপর চোখ আদ্দেক বুঁজে বিশ্বাস-দৃঢ়-কণ্ঠে বলতে লাগলো আবার··· এমন সময় আসবে জানি, যখন মানুষ মানুষের সাহচর্যে আনন্দ পাবে, যখন নক্ষত্রের মতে। একে অন্যকে আলো দেবে, যখন মানুষমাত্রের কানে বাজবে মানুষের কথা সঙ্গীতের মতো। মানুষ হ’বে সেদিন মুক্তিতে মহান, খোলা প্রাণে ঘুরবে ফিরবে তারা। হিংসা থাকবে না, বিদ্বেষ থাকবে না, লোভ থাকবে না, মানুষের যুক্তি অবজ্ঞাত হ’বে না। জীবন হ’বে মানুষের সেরা। মানুষ উন্নতির চরম শিখরে উঠবে— কারণ তখন সে মুক্ত। তখন আমরা জীবন কাটাবো সত্যে, স্বাধীনতায়, সৌন্দর্যে। তখন তারাই হ’বে তত শ্রেষ্ঠ, যারা যত বেশি প্রাণ দিয়ে পৃথিবীকে জড়িয়ে ধরতে পারে, মানুষকে যত বেশি ভালোবাসতে পারে। সব চেয়ে মুক্ত যারা, তারাই হবে সব চেয়ে মহান্, সব চেয়ে সুন্দর। তখন গৌরবমণ্ডিত হ’বে জীবন, গৌরবমণ্ডিত হ’বে জীবনের অধিকারী মানুষদল।···এই জীবনের জন্য আমি সব-কিছু করতে প্রস্তুত। দরকার হলে আমি নিজ হাতে নিজের হৃৎপিণ্ড উপড়ে আনবো, নিজ পায়ে তা দলিত করব।···

 উত্তেজনায় এণ্ড্রি কাঁপতে লাগলো।

 পেভেল মৃদুকণ্ঠে জিগ্যেস করলো, কি হয়েছে তোমার, এণ্ড্রি?

 শোনো, আমিই তাকে খুন করেছি।

 পেভেল বুঝলো, তাই এণ্ড্রি আজ এত চঞ্চল। এণ্ড্রির জন্য

৯৮