পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

সহানুভূতিতে তার বুক ভরে গেলো। মাও এই ব্যথিত ছেলেটিকে স্নেহ দিয়ে ঢেকে রাখতে চাইলেন।

 এণ্ড্রি বললো, তাকে কেন খুন করলুম, জানো? আমায় অপমান করেছিল—মানুষের পক্ষে চরম অপমান। এমন অপমান করতে আমায় কেউ কখন সাহস করেনি। আমি কারখানার দিকে যাচ্ছি, সে আমার পিছু নিয়ে বলতে লাগলো, আমাদের সবার নামই নাকি পুলিসের খাতায় আছে, পয়লা মের আগে সব্বাইকে শ্রীঘরে যেতে হবে। আমি কোনো জবাব দিলুম না, হাসলুম; কিন্তু রক্ত আমার টগ্ বগ্ ক’রে ফুটে উঠলো। তারপর সে বললো, তুমি চালাক লোক···এ পথে না চ’লে তোমার উচিত আইনের কাজে প্রবেশ করা, অর্থাৎ গোয়েন্দা হওয়া···ওঃ, কি অপমান, পেতেল! এর চাইতে মুখের ওপর ঘুসি মারলো না কেন সে! তাও হয়তো সইতে পারতুম। কিন্তু এ অসহ্য! মাথায় খুন চেপে গেলো। পেছন দিকে এক ঘুসি চালালুম···তারপর চ’লে গেলুম। ফিরে তাকালুমও না। শুনলুম সে ধপ ক’রে পড়ে গেলো নীরবে। মারাত্মক যে কিছু হয়েছে, তা আমি স্বপ্নেও ভাবিনি। আমি শান্তভাবে চ’লে গেলুম, যেন আর কিছু করিনি, একটা ব্যাঙকে লাথি মেরে পথ থেকে সরিয়ে রেখেছি।···তারপর কাজ করতে করতে শুনলুম, আইছে খুন হয়েছে। কথাটা আমার এমন-কি বিশ্বাসও হ’ল না—কিন্তু হাত যেন কেমন অসাড় হ’য়ে এলো...এ পাপ নয় আমি জানি, কিন্তু এ নোঙরা কাজ···সমস্ত জীবনেও যার কালিমা আমি ধুয়ে ফেলতে পারব না।

 পেভেল সন্দিগ্ধদৃষ্টিতে চেয়ে বললো, তা এখন কি করতে চাও, এণ্ড্রি?

 কি কোরব?···আমি খুন করেছি, একথা কবুল করতে ভয় খাইনে আমি। কিন্তু লজ্জা হয়···এমন একটা তুচ্ছ কাজ ক’রে জেলে যেতে

৯৯