পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

দেয়। মানুষতো গ্রামে বেঁচে নেই, তারা অপরিহার্য অভাবে প’চে মরছে, আর তাই চারদিকে কর্তারা শ্যেন-দৃষ্টি বিস্তার করে বসে আছে— একটি টুকরোও যাতে তাদের মুখে এসে না পড়ে—পড়লে, যাতে তাদের মুখে ঘুসি মেরে তারা তা ছিনিয়ে নিতে পারে।

 রাইবিন চারদিকে চাইলো, তারপর পেভেলের দিকে নুয়ে পড়ে টেবিলের ওপর হাত রেখে বলতে লাগলো, এমনি জীবন দেখে গা আমার রি রি করে উঠলো—ইচ্ছে হ’ল ছুটে শহরে চলে যাই। কিন্তু গেলুম না, গ্রামেই রইলুম। কর্তাদের চর্ব্যচোষ্য যোগাবার জন্য নয়, তাদের সঙ্গে বোঝাপড়া করতে। মানুষের ওপর অনুষ্ঠিত এই অন্যায়, এই অত্যাচারের জ্বালার বাহন আমি—শানিত ছুরিকার মতো এই অন্যায় অহর্নিশ আমার প্রাণে কেটে কেটে বসছে···আমায় সাহায্য কর পেভেল— এমন বই দাও, যা’ প’ড়ে মানুষ আর স্থির থাকতে পারবে না—তার মাথার মধ্যে আগুন জ্বলে উঠবে, এমন সত্য আজ তাদের শিক্ষা দাও যা গ্রামকে উত্তপ্ত ক’রে তুলবে, যা’ শুনে মানুষ মৃত্যুর মুখে ঝাঁপিয়ে পড়বে।···

 তারপর হাত তুলে প্রত্যেকটা কথার ওপর জোর দিয়ে বলতে লাগলো, মৃত্যু আজ শোধ করুক মৃত্যুর ঋণ—মৃত্যু আজ উদ্বুদ্ধ করুক নব-জীবন। সহস্র সহস্র প্রাণ আজ উৎসর্গীকৃত হ’ক বিশ্বমানবকে নবভাবে জাগিয়ে তোলার জন্য।···এই চাই। শুধু মরা নয়—সে তো সোজা। চাই নব জীবন, চাই বিপ্লব···

 মা চা নিয়ে এলেন। পেভেল বললো, বেশতো, মাল-মশলা দাও, পাড়াগাঁর জন্যও আমরা একটা কাগজ বের করছি।

 দেবো। যতদুরসম্ভব সোজা ভাষায় লিখো···একটা ছোট ছেলেও যেন বুঝতে পারে।

১০৩