পাতা:মিবার-গৌরব-কথা - হেমলতা দেবী.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
মিবার-গৌরব-কথা।

আসিয়া পিতৃসিংহাসন অধিকার করিলেন। রায়মল্লের অদৃষ্টে পারিবারিক সুখ বিধাতা লেখেন নাই। তাঁহার তিনটী পুত্র ছিলেন; তাঁহারা ভ্রাতৃপ্রেম বিস্মৃত হইয়া পরস্পরের সহিত বিবাদ বিসম্বাদে কালযাপন করিতেন। জ্যেষ্ঠ সঙ্গ, মধ্যম পৃথ্বীরাজ এবং কনিষ্ঠ জয়মল্ল। পিতার জীবদ্দশাতেই চিতােরের সিংহাসন কে অধিকার করিবে এই প্রশ্ন লইয়া তাঁহারা সর্ব্বদাই তর্কযুদ্ধে প্রবৃত্ত হইতেন। পুত্রত্রয়ই পৈতৃক সিংহাসন লাভের জন্য ব্যাকুল এবং পরস্পরের শত্রুতা সাধনে বদ্ধপরিকর। একদিন তাঁহারা তিনজনেই পিতৃব্য সূর্য্য মল্লের সম্মুখে এই বিষয় লইয়া ঘোর তর্কযুদ্ধে প্রবৃত্ত হইলেন। কিছুতেই এ প্রশ্নের মীমাংসা হয় না। তখন সঙ্গ বলিলেন, “নাহরা মুগরার[১] চারণী দেবীর পরিচারিকা সন্ন্যাসিনী যাঁহাকে নির্ব্বাচিত করিবেন তিনিই মিবার রাজ্যের উত্তরাধিকারী হইবেন।” এই প্রস্তাবে সকলেই সম্মত হইয়া স্ব স্ব ভাগ্য পরীক্ষার জন্য সন্ন্যাসিনীর আশ্রমে উপস্থিত হইলেন। পৃথ্বীরাজ এবং জয়মল্ল অগ্রেই গৃহে প্রবেশ করিয়া একখানি আসনে উপবেশন করিলেন। তাঁহাদের পশ্চাতেই সঙ্গ এবং সূর্য্যমল্ল প্রবেশ করিয়া অপর একখানি ব্যাঘ্রচর্ম্মের উপর উপবেশন


  1. উদয়পুরের পাঁচ ক্রোশ দূরে অবস্থিত।