পাতা:মিবার-গৌরব-কথা - হেমলতা দেবী.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
মিবার-গৌরব-কখা।

করিয়া বাবরের সৈন্যগণের কষ্টের এক শেষ হইল। তিনি সংগ্রাম সিংহের সহিত সন্ধি করিবার জন্য ব্যাকুল হইলেন। কিন্তু সন্ধির প্রস্তাব উপস্থিত হইয়াও কার্য্যে পরিণত হইল না। রাজপুতসেনা বিজয়মদোন্মত্ত হইয়া যুদ্ধের জন্য অসহিষ্ণু হইয়া উঠিল। আজীবন যুদ্ধে জয় হইয়া সংগ্রামসিংহ নিতান্ত আত্মপ্রত্যয়শীল হইয়া উঠিয়া ছিলেন। রাজপুতগণ নিতান্ত অনভিজ্ঞের ন্যায় বাবরের ব্যুহ আক্রমণ করিল! যুদ্ধের মধ্যস্থলে সংগ্রামসিংহে দলস্থ একজন সর্দ্দার সসৈন্যে বাবরের সহিত যোগদান করিল। হায়। এতদিন পরে সংগ্রামসিংহের প্রতি বিজয়লক্ষ্মী বিমুখ হইলেন! দ্বিতীয় যুদ্ধে সংগ্রামসিংহ পরাস্ত হইলেন। তিনি ভগ্ন হৃদয়ে মিবারের অভিমুখে যাত্রা করিলেন বটে, কিন্তু চিতোরে আর প্রবেশ করিলেন না। পর্ব্বতে আশ্রয় গ্রহণ করিলেন। সংগ্রামসিংহ প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলেন, হয় বিজয়ী বেশে চিতোরে প্রবেশ করিবেন নচেৎ আর পিতৃপুরুষের পবিত্র রাজধানীতে প্রবেশ করিবেন না। চিতোরবাসী সংগ্রামসিংহকে চিরদিন বিজয়ী দেখিয়া আসিয়াছে। আজ হতমান হইয়া চিতোরবাসীকে আর মুখ দেখাইলেন না। রাজপুত বীর কি কখন যুদ্ধক্ষেত্র হইতে প্রাণ লইয়া ফিরিয়া আইসে?