পাতা:মিবার-গৌরব-কথা - হেমলতা দেবী.pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
মিবার-গৌরব-কথা।

হইতে দেখ অভাগিণী পান্না হৃদ্‌পিণ্ড ছেদন করিয়া তোমার নিকট শপথ পালন করিল।” নির্দ্দিষ্ট স্থানে উপনীত হইয়া পান্না দেখে শিশু উদয়সিংহ তখনও নিদ্রিত। পান্না ভাবিল বালককে বক্ষে ধরিয়া হৃদয় শীতল করিবে। কিন্তু এ জীবনে সে ভীষণ অগ্নি আর নির্ব্বাপিত হইবার নহে। পান্না শিশুকে লইয়া সমুদায় বিশ্বস্ত সর্দ্দারের আশ্রয় ভিক্ষা করিল। বনবীরের ভয়ে কেহই শিশুকে আশ্রয় দিতে সম্মত হইল না। ধাত্রী পান্না নিজ সন্তানের জীবনের বিনিময়ে যাহার জীবন রক্ষা করিল; আজ তাহার পিতার প্রসাদভোগী সর্দ্দারগণ দুর্দ্দিনে সেই শিশুকে আশ্রয় দিল না। ক্ষোভে দুঃখে ঘৃণায় পান্নার হৃদয় জ্বলিতে লাগিল! অবশেষে আশাশা নামে একজন জৈন সর্দ্দারের গৃহে উপনীত হইয়া শিশুর জন্য আশ্রয় ভিক্ষা করিল। আশাশা অপরাপর সর্দ্দারদিগের ন্যায় প্রথমে অসম্মত হইলেন বটে কিন্তু তাঁহার বৃদ্ধা জননী পুত্রকে শত ধিক্কার দিয়া বলিলেন, “বৎস একটী শিশুকে আশ্রয় দিতে তোমার এত ভয়! সংগ্রামসিংহের নিকট তুমি কি ঋণী নহ? নিশ্চয় জানিও তুমি এই শিশুকে আশ্রয় দিলে সেই পুণ্যফলে বিধাতা তোমার চিরকল্যাণ করিবেন।”