পাতা:মিবার-গৌরব-কথা - হেমলতা দেবী.pdf/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাণা প্রতাপসিংহ।
৫৭

ভাষায় তাঁহাকে ডাকিয়া থামিতে বলিল,—“হো নীল ঘোড়াকা আসোয়ার।” প্রতাপ চমকিত হইলেন। এ কে? চাহিয়া দেখেন আর কেহ নয়, তাঁহার সহোদর শক্তসিংহ। দুবৃত্ত শক্ত তাঁহার শত্রুতা সাধন করিতে শত্রুদলে মিশিয়াছিল। তাহাকে দেখিয়া তাঁহার হৃদয় রোষে, বিস্ময়ে, দুঃখে পূর্ণ হইল। তিনি অসি হস্তে ফিরিয়া দাঁড়াইলেন। “এস নরাধম, এস কুলকলঙ্ক, আজ কণ্টককে নির্ম্মূল করি,” বলিয়া সেই নির্জ্জন গিরিদেশ কম্পিত করিয়া প্রতাপ গর্জ্জন করিয়া উঠিলেন। কিন্তু এ কি! শক্তের মুখের দিকে চাহিয়া প্রতাপ অবাক্ হইলেন। তাহার মুখ স্নান, লজ্জায় শক্ত মস্তক অবনত করিয়া আছে। প্রতাপ বুঝিলেন, শক্ত আর শত্রু নয়; শক্ত তাঁহার ভাই। শক্ত আসিয়া প্রতাপের পদতলে পড়িয়া এই বলিয়া ক্ষমা ভিক্ষা করিলেন—“দাদা! এ কুলকলঙ্ককে মার্জ্জনা করুন, আপনার মত ভ্রাতার শক্রতা সাধন করিয়া যে মহাপাতক করিয়াছি, তাহার আর প্রায়শ্চিত্ত নাই। দাদা! অধমকে চরণে স্থান দিন।”

 সেই ঘোর বিপদের দিনে প্রতাপ ভ্রাতৃপ্রেম ফিরিয়া পাইলেন। এতদিনের হারানিধি এ ঘোর দুর্দ্দিনে তাঁহার