পাতা:মিবার-গৌরব-কথা - হেমলতা দেবী.pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬২
মিবার-গৌরব-কথা।

শক্তকে আমায় দান করুণ” রাণা প্রার্থনা পূর্ণ করিতে প্রতিশ্রুত হইলেন। কাজেই শক্ত সে যাত্রা রক্ষা পাইলেন, এবং সেইদিন হইতে সেই সর্দ্দারের পোষ্যপুত্ররূপে তাঁহার নিকট বাস করিতে লাগিলেন। শক্ত বয়ঃপ্রাপ্ত হইলে, প্রতাপ তাঁহাকে আপনার নিকট অনিয়া রাখিলেন; কিন্তু দুই বীর ভ্রাতায় শান্তি-সুখে অধিক দিন বাস করা ঘটিল না। একদিন দুই জনে মিলিয়া মৃগয়া করিতে গিয়াছেন। পথে লক্ষ্য সম্বন্ধে কথা লইয়া দুই ভ্রাতায় মহা তর্ক বিতর্ক হইল। কিছুতেই আর মীমাংসা হয় না, শক্তও নিরস্ত হইবার পাত্র নহে, অবশেষে প্রতাপ অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হইয়া হস্তের শেল উদ্যত করিয়া এই বলিয়া হুঙ্কার করিয়া উঠিলেন, “এস, তবে দেখি কার লক্ষ্য অব্যর্থ।” অমনি শক্ত ও মহাতেজে বলিয়া উঠিলেন, “আচ্ছা, তবে আসুন দেখি।” সর্ব্বনাশ! ভ্রাতৃদ্বয় শেল হস্তে পরস্পরকে বিনাশ করিতে উদ্যত।—বীরপ্রথা অনুসারে তখনই শক্ত প্রতাপের পদধূলি লইলেন, প্রতাপও তাঁহাকে আশীর্ব্বাদ করিলেন। উপস্থিত সকলে এই ব্যাপার দেখিয়া অবাক হইয়া রহিল। সামান্য কথা লইয়া মিবারে রাজকুলের সর্ব্বনাশ!! দুই বীর বুঝি চিরদিনের মত বিদায় গ্রহণ করেন।