পাতা:মিবার-গৌরব-কথা - হেমলতা দেবী.pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
মিবার-গৌরব কথা।

ইহাই একমাত্র উপায় বলিয়া তাহার প্রতীতি হইল। রাণা স্বর্গীয় অপত্যস্নেহে জলাঞ্জলি দিয়া ভীরু কাপুরুষের ন্যায় এই লোমহর্ষণ প্রস্তাবে সম্মত হইলেন। কালের কি পরিবর্ত্তন! এই ভীমসিংহই শিশোদীয় কুলোদ্ভব প্রতাপ সিংহের বংশধর। এই বংশেরই কুলবধু পদ্মিনীর সৌন্দর্য্যে মিবার রাজ্যের কি দুর্দ্দশা হইয়াছিল তাহা কি রাণা ভীম সিংহ একেবারেই বিস্মৃত হইয়াছিলেন। পদ্মিনীকে হত্যা করিয়া কেহ বিপদ সাগর হইতে উত্তীর্ণ হইবার প্রস্তাব করে নাই। পদ্মিনীর রক্ষার জন্য রাজপুত বীরগণ সমরসাগরে ঝম্প প্রদান করিয়া প্রাণত্যাগ করিয়াছিল। সহস্র সহস্র রাজপুতরমণী চিতানলে দেহ ভস্মসাৎ করিয়াছিলেন। তথাপি পদ্মিনীবধের প্রস্তাব কাহারও হৃদয়ে প্রবেশ করে নাই; আর আজ সেই বংশোদ্ভব ভীম সিংহ নিরপরাধ কন্যাকে স্বহস্তে বলি দিয়া তুচ্ছ সিংহাসন রক্ষার জন্য ব্যাকুল হইলেন! মানবে মানবে এতই প্রভেদ। পদ্মিনীপতি ভীম সিংহে এবং কৃষ্ণকুমারীর পিতা ভীমসিংহে কি প্রভেদ! তখনও কি চিতোরের দুর্দ্দশার একশেষ হয় নাই! এক্ষণে রাণার নিকট বিপদের বিভীষিকাই প্রাণান্তকর বলিয়া বোধ হইল! বিপদ সাগরে ঝম্প প্রদান করা দূরে থাক,