পাতা:মিবার-গৌরব-কথা - হেমলতা দেবী.pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪
মিবার-গৌরব কথা।

সামন্তের মুখে এই কঠোর বাক্য শুনিয়াও রাণার চৈতন্য হইল না! হায়! মানব চিত্ত কি অপূর্ব্ব বস্তু! অগত্যা রাণার এক বৈমাত্রেয় ভ্রাতা এই প্রস্তাব কার্য্যে পরিণত করিতে স্বীকৃত হইল! সেই পামর তীক্ষ্ণ ছুরিকা হস্তে লইয়া কৃষ্ণকুমারীকে সম্মুখে আহ্বান করিল। নিষ্কলঙ্ক পবিত্র সৌন্দর্য্যরাশি লইয়া কৃষ্ণা প্রসন্নবদনে সম্মুখে আসিয়া দণ্ডায়মান হইল। সেই অপরূপ দেবী মূর্ত্তি দেখিয়া পামরের হৃদয় কম্পিত হইল হস্ত সহসা অবশ হইয়া পড়িল। তিনি আর কৃষ্ণার মুখের দিকে চাহিতে পারিলেন না; সহসা সে গৃহ হইতে দ্রুত পদে বহির্গত হইলেন। ভীম সিংহকে গিয়া বলিলেন “না মহারাজ! এমন কোন পামর নাই যে সে দেবীমূর্ত্তিকে আঘাত করিতে পারে।” এই নন্দন পারিজাত কে দলন করিবে? কেহই এ কর্ম্মে অগ্রসর হইল না। অবশেষে কৃষ্ণার জননী অহল্যাবাইয়ের কর্ণে এই ভীষণ সংবাদ পৌঁছিল। তিনি শোকে দুঃখে রোষে ক্ষিপ্তপ্রায় হইলেন। তাঁহার হাহাকার ও ক্রন্দনে রাজবাটী নিনাদিত হইল! তিনি পতির চরণে পড়িয়া কত অনুনয় কত কাতর প্রার্থনা করিলেন, অবশেষে হস্ত দুখানি উর্দ্ধে তুলিয়া কত অভিসম্পাৎ করিলেন। ভীম সিংহের হৃদয় কি বজ্রের আকার ধারণ করিয়াছিল!