পাতা:মিবার-গৌরব-কথা - হেমলতা দেবী.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কৃষ্ণকুমারী।
৭৫

কিছুতেই তাঁহার ভীষণ অভিসন্ধি শিথিল হইল না। রাজপুরীতে সর্ব্বত্রই আর্ত্তনাদ! সর্ব্বত্রই হাহাকার— পরিচারিকাগণ শোকে বিহ্বল। কে কাহাকে সান্ত্বনা করে, সকলের মুখেই এক বাণী “হা বিধাতঃ! রক্ষা কর! রক্ষা কর! আমাদের প্রাণ পুত্তলিকা কৃষ্ণাকে রক্ষা কর!” কে রক্ষা করিবে? জনক জননীই সন্তানের রক্ষক, সন্তানের চির আশ্রয়! আজ সেই জন্মদাতা চির আশ্রয় পিতাই হন্তা। অভাগিনী কৃষ্ণার আর আশ্রয় কে? সকলেই শোকার্ত্ত! সকলেই আত্মহারা! কেবল এই ষোড়শী সুকুমারী বালিকা স্থির, ধীর, শান্ত আত্মস্থ ও নির্ভীক! কৃষ্ণাই সকলকে এই দুর্দ্দিনে সান্তনা দিতেছে। বারম্বার জননীর কণ্ঠালিঙ্গন করিয়া বলিতেছে “মা তুমি বীরকন্যা, বীরনারী তুমি কেন সামান্য নারীর ন্যায় রোদন করিতেছ? রাজপুতরমণী কি কোন দিনও জীবনোৎসর্গ করিতে ভীত হইয়াছে? মাগো! যে বংশে জন্ম আমার সে বংশের নারীগণ কখনও মৃত্যুকে ভয় করে না। মা তোমারই মুখে জহর ব্রতের কথা শুনিয়াছি। কেন জননি আজ তুমি পূর্ব্বকথা বিস্মৃত হইতেছ। যুগে যুগে কত সহস্র সহস্র রাজপুতবালা জ্বলন্ত চিতায় প্রাণ বিসর্জ্জন করিয়াছে। রাজপুতবালার জীবনাহুতি কি নূতন ব্যাপার।