পাতা:মীরকাসিম - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/২১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Reb" মীর কাসিম এ দিকে নবাব-শিবিরেও বর্ষাকাল সুখের কাল বলিয়া পরিচিত হইতে পারিল না । বর্ষার প্রবল প্ৰতাপে সমরকোলাহল নিরস্ত হইলেও, নবাবশিবিয়ে কলহকোলাহল প্ৰবল হইয়া উঠিল। একটি মাত্র সংকীর্ণ শিবিরে তিনজন প্ৰবল পরাক্রান্ত স্বাধীন নররতির দীর্ঘকাল একত্র অবস্থান সুখকর হইবার পক্ষে বাধা-বিক্সের অভাব ছিল না। সকলেরই কুচক্রী পাত্ৰমিত্ৰ সর্বদা তুচ্ছ বিষয় লইয়া পরস্পরের সঙ্গে কলহে লিপ্ত হইয়া শান্তিভঙ্গ করিতেন। যুদ্ধ-কালে গৃহকলহ নীরবে ঘনীভূত হইতেছিল। বর্ষাকালে তাহাই প্ৰবলবেগে ঈর্ষান্বেষ। বর্ষণ করিতে লাগিল। এক পাটমণ্ডপ হইতে অন্য পটমণ্ডপে কত তুচ্ছ কথা বিপুলাকার ধারণ করিয়া মুখে মুখে বিস্তৃতি লাভ করিতে লাগিল। অবশেষে সুজা-উদ্দৌলা শুনিলেন-মীর কাসিম না কি পাটনার যুদ্ধে আশ্রয়-দাতা সুজা-উদ্দৌলাকেও হত্যা করিতে কৃতসঙ্কল্প হইয়াছিলেন । এমন মিথ্যা কথায় অস্ক কেহ আস্থা স্থাপন করিত না ; কিন্তু বিশ্বাসঘাতক সমরু এই কথা ব্যক্তি করায়, উজীর সাহেব মীর কাসিমের প্রতি মনে মনে বিলক্ষণ অসন্তুষ্ট হইয়া উঠিলেন। শাহজাদা শাহ আলম অধিক দিন সমর শিবিরে অবস্থান করিয়া অসহিষ্ণু হইয়া উঠিযাছিলেন । তিনি গোপনে গোপনে ইংরাজ-সেনাপতির সহিত সন্ধিসংস্থাপনের চেষ্টা করিতে প্ৰবৃত্ত হইলেন। মীর কাসিমের শেষ আশা এইরূপে সমূলে উন্মলিত হইবার উপক্রম হইল। তিনি তাহার সন্ধান লাভ না করিয়া বর্ষাকালে শিবিরে বসিয়া সুখস্বপ্নে বিভোর হইয়া রহিলেন ।