পাতা:মুকুট - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মুকুট

 রাজধর। দাদা, আজ পূর্ণিমা আছে, আজ রাত্রে যখন গোমতী নদীতে বাঘে জল খেতে আসবে তখন শিকার করতে গেলে হয় না?

 যুবরাজ। বেশ কথা। তোমার যদি ইচ্ছে হয়ে থাকে তো যাওয়া যাবে।

 ইন্দ্রকুমার। কী আশ্চর্য। রাজধরের যে শিকারে প্রবৃত্তি হল। এমন তো কখনও দেখা যায় নি।

 ইশা খাঁ। ওঁর আবার শিকারে প্রবৃত্তি নেই! উনি সকলের চেয়ে বড়ো জীব শিকার করে বেড়ান। রাজসভায় দুই-পা-ওয়ালা এমন একটি জীব নেই যিনি ওঁর কোনো না কোনো ফাঁদে আটকা না পড়েছেন।

 যুবরাজ। তোমার তলোয়ারও যেমন তোমার জিহ্বাও তেমনি, দুই-ই খরধার— যার উপর গিয়ে পড়ে তার একেবারে মর্মচ্ছেদ না করে ফেরে না।

 রাজধর। দাদা, তুমি আমার জন্যে ভেবো না। খাঁ সাহেব জিহ্বায় যতই শান দিন না কেন আমার মর্মে আঁচড় কাটতে পারবেন না।

 ইশা খাঁ। তোমার মর্ম পায় কে বাবা। বড়ো শক্ত।

 ইন্দ্রকুমার। যেমন, হঠাৎ আজ রাত্রে তোমার শিকারে যাবার শখ হল, এর মর্ম ভালো বোঝা যাচ্ছে না।