পাতা:মৃণালিনী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

शूभोलिनौँ من: বিধিলিপি খণ্ডাইবার ভরসায় বিবাহের রাত্রিতেই মেয়ে লইয়া প্রয়াগে পলায়ন করিলেন। র্তাহার অভিপ্রায় এই ছিল যে, তাহার মেয়ে স্বামীর মৃত্যুসংবাদ কষ্মিন্‌ কালে না পাইতে পারেন। দৈবাধীন কিছুকাল পরে, প্রয়াগে কেশবের মৃত্যু হইল। উহার মেয়ে পূর্বেই মাতৃহীন হইয়াছিল—এখন মৃত্যুকালে কেশব হৈমবতীকে আচার্য্যের হাতে সমর্পণ করিয়া গেলেন। মৃত্যুকালে কেশব আচাৰ্য্যকে এই কথা বলিয়া গেলেন, "এই অনাথ৷ মেয়েটিকে আপনার গৃহে রাখিয়া প্রতিপালন করিবেন। ইহার স্বামী পশুপতি-কিন্তু জ্যোতির্বিবদেরা বলিয়া গিয়াছেন যে, ইনি অল্পবয়সে স্বামীর অনুমৃত হইবেন । অতএব আপনি আমার নিকট স্বীকার করুন যে, এই মেয়েকে কখনও বলিবেন না যে, পশুপতি ইহার স্বামী। অথবা পশুপতিকে কখনও জানাইবেন না যে, ইনি তাহার স্ত্রী। “আচাৰ্য্য সেইরূপ অঙ্গীকার করিলেন। সেই পৰ্য্যন্ত তিনি তাহাকে পরিবারন্থ করিয়া, প্রতিপালন করিয়া, তোমার সঙ্গে বিবাহের কথা লুকাইয়াছেন।” প। এখন সে কন্যা কোথায় ? ম। আমিই কেশবের মেয়ে—জনাৰ্দ্দন শৰ্মা তাহার আচাৰ্য্য। পশুপতি চিত্ত হারাইলেন , তাহার মস্তক ঘুরিতে লাগিল। তিনি বাঞ্ছনিম্পত্তি না করিয়া প্রতিমাসমীপে সাষ্টাঙ্গ প্ৰণিপাত করিলেন। পরে গাত্ৰোখান করিয়া মনোরমাকে বক্ষে ধারণ করিতে গেলেন। মনোরমা পূৰ্ব্ববৎ সরিয়া দাড়াইল। কছিল, “এখন মঙ্গ— আরও কথা আছে।” - প। মনোরমা—রাক্ষসী । এতদিন কেন আমাকে এ অন্ধকারে রাখিয়াছিলে ? ম। কেন ! তুমি কি আমার কথায় বিশ্বাস করিতে ? প। মনোরমা, তোমার কথায় কবে আমি অবিশ্বাস করিয়াছি ? আর যদিই আমার অপ্রত্যয় জন্মিত, তবে আমি জনাৰ্দ্দন শৰ্ম্মাকে জিজ্ঞাসা করিতে পারিতাম। ম। জনাৰ্দ্দন কি তাহ প্রকাশ করিতেন ? তিনি শিষ্কের নিকট সত্যে বন্ধ আছেন। প। তবে তোমার কাছে প্রকাশ করিলেন কেন ? ম। তিনি আমার নিকট প্রকাশ করেন নাই। একদিন গোপনে ব্রাহ্মণীর নিকট প্রকাশ করিতেছিলেন। আমি দৈবাৎ গোপনে শুনিয়াছিলাম। আরও আমি বিধবা বলিয়া পরিচিত । তুমি আমার কথায় প্রত্যয় করিলে লোকে প্রত্যয় করিযে কেন ? তুমি লোকের কাছে নিন্দনীয় না হইয়া কি প্রকারে আমাকে গ্রহণ করিতে? প। আমি সকল লোককে একত্র করিয়া তাহাদিগকে বুঝাইয়া বলিতাম। "