পাতা:মৃণালিনী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিহঙ্গী পিঞ্জরে 翰颖 ম। ভাল, তাহাই হউক,—জ্যোতিধিবদের গণনা ? প। আমি গ্রহশাস্তি করাইতাম। ভাল, যাহা হইবার, তাহ হইয়া গিয়াছে। এক্ষণে যদি আমি রত্ন পাইয়াছি, তবে আর তাহ গল হইতে নামাইব না। তুমি আর আমার ঘর ছাড়িয়া যাইতে পারিবে না। মনোরম কহিল, “এ ঘর ছাড়িতে হইবে। পশুপতি ! আমি যাহা আজি বলিতে আসিয়াছিলাম, তাহ বলি শুন । এ ঘর ছাড় । তোমার রাজ্যলাভের হ্রাশ ছাড়। প্রভুর অহিত চেষ্টা ছাড়। এ দেশ ছাড়িয়া চল, আমরা কাশীধামে যাত্রা করি। সেইখানে আমি তোমার চরণসেবা করিয়া জন্ম সার্থক করিব । যে দিন আমাদিগের আয়ুশেষ হইবে, একত্রে পরমধামে যাত্রা করিব। যদি ইহা স্বীকার কর—আমার ভক্তি অচলা থাকিবে । নহিলে—” প। নহিলে কি ? মনোরম তখন উন্নতমুখে, সবাষ্পলোচনে, দেবীপ্রতিমার সম্মুখে দাড়াইয়া, যুক্তকরে, . গদগদকণ্ঠে কহিল, "নহিলে, দেবীসমক্ষে শপথ করিতেছি, তোমায় আমায় এই সাক্ষাং, ; এ জন্মে আর সাক্ষাৎ হইবে না।” পশুপতিও দেবীর সমক্ষে বদ্ধাঞ্জলি হইয়া দাড়াইলেন । বলিলেন, “মনোরমা— আমিও শপথ করিতেছি, আমার জীবন থাকিতে তুমি আমার বাড়ী ছাড়িয়া যাইতে পারিবে না। মনোরমা, আমি যে পথে পদার্পণ করিয়াছি, সে পথ হইতে কিরিবার উপায় থাকিলে আমি ফিরিতাম—তোমাকে লইয়৷ সৰ্ব্বত্যাগী হইয়৷ কাশীযাত্রা করিতাম । কিন্তু অনেক দূর গিয়াছি, আর ফিরিবার উপায় নাই—যে গ্রন্থি বাধিয়াছি, তাহা আর খুলিতে পারি না—শ্রোতে ভেলা ভাসাইয়া আর ফিরাইতে পারি না। যাহা ঘটিবার তাহা ঘটিয়াছে। তাই বলিয়া কি আমার পরমমুখে আমি বঞ্চিত হইব ? তুমি আমার স্ত্রী, আমার কপালে যাই থাকুক, আমি তোমাকে গৃহিণী করিব। তুমি ক্ষণেক অপেক্ষ কর–আমি শীক্স আসিতেছি।” এই বলিয়া পশুপতি মন্দির হইতে নিষ্ক্রাস্ত হইয়া গেলেন। মনোরমার চিত্ত্বে সংশয় জন্মিল। সে চিন্তিতাস্বঃকরণে কিয়ৎক্ষণ মন্দিরমধ্যে fিাড়াইয়া রহিল। আর একবার পশুপতির নিকট বিদায় না লইয়া যাইতে পারিল না। অল্পকাল পরেই পশুপতি ফিরিয়া আসিলেন। বলিলেন, “প্রাণাধিকে। আজি আর তুমি আমাকে ত্যাগ করিয়া যাইতে পারিবে না। আমি সকল দ্বার রুদ্ধ করিয়া আসিয়াছি।” মনোরম বিহঙ্গী পিয়রে বন্ধ হইল। یہ "**.