পাতা:মৃণালিনী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রেম–লান প্রকার ১১& করিও মা " হেমচন্দ্ৰ যেন বলিলেন, “আর কখন তোমায় ত্যাগ করিব না।” সেই কণ্ঠস্বরে যেন— । তাহার নিদ্রাভঙ্গ হইল, “আর কখনও তোমায় ত্যাগ করিব না জাগ্রতেও এই কথা শুনিলেন। চক্ষু উন্মীলন করিলেন—কি দেখিলেন ? যাহা দেখিলেন, তাহা বিশ্বাস হুইল না। আবার দেখিলেন সত্য ! হেমচন্দ্র সম্মুখে —হেমচন্দ্র বলিতেছেন—“আর একবার ক্ষমা কর—আর কখনও তোমায় ত্যাগ করিব না।” নিরভিমানিনী, নির্লজ্জা মৃণালিনী আবার তাহার কণ্ঠলগ্ন হইয়। স্বন্ধে মস্তক রক্ষা করিলেন । দশম পরিচ্ছেদ প্রেম—নানা প্রকার আনন্দাঙ্কল্পবিত-বদন মৃণালিনীকে হেমচন্দ্র হস্তে ধরিয়া উপবন-গৃহাভিমুখে লইয় চলিলেন। হেমচন্দ্র মৃণালিনীকে একবার অপমানিত, তিরস্কৃত, ব্যথিত করিয়া ত্যাগ করিয়া গিয়াছিলেন, আবার আপনি অti১ গাই উহাকে হৃদয়ে গ্রহণ করিলেন,—ইহা দেখিয়া গিরিজায় বিস্মিত হইল, কিন্তু মৃণালিনী একটি কথাও জিজ্ঞাসা করিলেন না, একটি কথাও কহিলেন না। আনন্দপরিপ্লববিবশী হইয়া বসনে অশ্রুক্রতি আবৃত করিয়া চলিলেন। গিরিজায়াকে ডাকিতে হইল না—সে স্বয়ং অন্তরে থাকিয়া সঙ্গে সঙ্গে চলিল । উপবনবাটিকায় মৃণালিনী আসিলে, তখন উভয়ে বহুদিনের হৃদয়ের কথা সকল ব্যক্ত করিতে লাগিলেন। তখন হেমচন্দ্র, যে ষে ঘটনায় মৃণালিনীর প্রতি র্তাহার চিত্তের বিরাগ হইয়াছিল আর যে যে কারণে সেই বিরাগের ধ্বংস হইয়াছিল, তাহ বলিলেন। তখন মৃণালিনী যে প্রকারে হৃষীকেশের গৃহ ত্যাগ করিয়াছিলেন, যে প্রকারে নবদ্বীপে আসিয়াছিলেন, সেই সকল বলিলেন। তখন উভয়েই হৃদয়ের পূৰ্ব্বোদিত কত ভাৰ পরম্পরের নিকট ব্যক্ত করিতে লাগিলেন। তখন উভয়েই কত ভবিষ্যৎসম্বন্ধে কল্পনা করিতে লাগিলেন ; তখন কতই নূতন নূতন প্রতিজ্ঞায় বদ্ধ হইতে লাগিলেন। তখন উত্তরে নিতান্ত নিম্প্রয়োজন কত কথাই অতি প্রয়োজনীয় কথার ছায় আগ্রন্থ সহকারে ব্যক্ত করিতে লাগিলেন। তখন কতবার উভয়ে মোক্ষোন্মুখ অশ্ৰুজল কষ্টে নিবারিত

, , , : - - ... * * * , , .