পাতা:মৃণালিনী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পিঙ্গরের বিহঙ্গী 3% মৃণালিনী কহিলেন, “আমি হেমচন্দ্রের আঙ্গটি দেখিয়া তাকে দেখিবার ভরসায় গানে আসিলে দূতী কহিল যে, রাজপুত্র নৌকায় আছেন, নৌকা তীরে লাগিয়া ইয়াছে। আমি অনেক দিন রাজপুত্রকে দেখি নাই। বড় ব্যগ্র হইয়াছিলাম, তাই বেচনাশূন্ত হইলাম। তীরে আসিয়া দেখিলাম যে, যথার্থই একখানি নৌকা লাগিয়া হিয়াছে। তাহার বাহিরে এক জন পুরুষ দাড়াইয়া রহিয়াছে, মনে করিলাম যে, জপুত্র দাড়াইয়া রহিয়াছেন। আমি নৌকার নিকট আসিলাম। নৌকার উপর নি দাড়াইয়া ছিলেন, তিনি আমার হাত ধরিয়া নৌকায় উঠাইলেন। অমনি বিকের নৌকা খুলিয়া দিল। কিন্তু আমি স্পর্শে ই বুঝিলাম যে, এ ব্যক্তি হেমচন্দ্র হে ।” মণি । আর অমনি তুমি চীৎকার করিলে ? মৃ । চীৎকার করি নাই। একবার ইচ্ছা করিয়াছিল বটে, কিন্তু চীৎকার সিল না। মণি । আমি হইলে জলে ঝাপ দিতাম । মৃ । হেমচন্দ্রকে না দেখিয়া কেন মরিব ? মণি । তার পর কি হইল ? মৃ। প্রথমেই সে ব্যক্তি আমাকে “মা” বলিয়া বলিল, “আমি তোমাকে মাতৃম্বোধন করিতেছি—আমি তোমার পুত্র, কোন আশঙ্কা করিও না। আমার নাম মাধবাচাৰ্য্য, |ামি হেমচন্দ্রের গুরু। কেবল হেমচন্দ্রের গুরু এমত নহি ; ভারতবর্ষের রাজগণের মধ্যে নেকের সহিত আমার সেই সম্বন্ধ। আমি এখন কোন দৈবকার্য্যে নিযুক্ত আছি, তাহাতে মচন্দ্র আমার প্রধান সহায় ; তুমি তাহার প্রধান বিস্তু ” - আমি বলিলাম, “আমি বিস্তু ?” মাধবাচাৰ্য্য কহিলেন, “তুমিই বিস্তু। যবনদিগের য় করা, হিন্দুরাজ্যের পুনরুদ্ধার করা, স্বসাধ্য কৰ্ম্ম নহে ; হেমচন্দ্র ব্যতীত কাহারও সাধ্য হে ; হেমচন্দ্রও অনন্তমনা না হইলে তার দ্বারাও এ কাজ সিদ্ধ হইবে না। যত দিন চামার সাক্ষাৎলাভ স্থলভ থাকিবে, তত দিন হেমচন্দ্রের তুমি ভিন্ন অন্য ত্রত নাই—মুতরাং বন মারে কে ? আমি কহিলাম, “বুঝিলাম, প্রথমে আমাকে না মারিলে যবন মারা ইবে না। আপনার শিষ্য কি আপনার দ্বারা আঙ্গটি পাঠাইয়া দিয়া আমাকে মারিতে rাজ্ঞা করিয়াছেন ?” মণি । এত কথা বুড়াকে বলিলে কি প্রকারে ।