পাতা:মৃণালিনী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२8 মৃণালিনী

  • আইসেন নাই ।” এই কথাটি মৃণালিনীর অন্তস্তল হইতে ধ্বনিত হইল। ক্ষণেক উভয়ে নীরব। তৎপরে মৃণালিনী জিজ্ঞাসা করিলেন, "কেন আসিলেন না " ।

” গি। তাহা আমি জানি না। এই পত্ৰ দিয়াছেন। . এই বলিয়া গিরিজায়া উহার হন্তে পত্র দিল। মৃণালিনী কছিলেন, “কি প্রকারেই ੇ। পড়ি, 'शृण्ह গিয়া প্রদীপ জালিয়া পড়িলে মণিমালিনী উঠিবে।” : g গিরিজায়া কহিল, “অধরা হইও না। আমি প্রদীপ, তেল, চকুমকি, সোল সকলই আনিয়া রাখিয়াছি। এখনই আলো করিতেছি।” গিরিজায়৷ শীঘ্রহস্তে অগ্নি উৎপাদন করিয়া প্রদীপ জালিত করিল। অগ্ন্যুৎপাদনশব্দ একজন গৃহবাসীর কর্ণে প্রবেশ করিল। দীপালোক সে দেখিতে পাইল । গিরিজায়। দীপ জালিত করিলে মৃণালিনী, নিম্নলিখিত মত মনে মনে পাঠ করিলেন। “মৃণালিনি। কি বলিয়া আমি তোমাকে পত্র লিখিব ! তুমি আমার জন্য দেশত্যাগিনী হইয়া পরগৃহে কষ্টে কালাতিপাত কুরিতেছ। যদি দৈবামুগ্রহে তোমার সন্ধান পাইয়াছি, তথাপি তোমার সহিত সাক্ষাৎ করিলাম না। তুমি ইহাতে আমাকে অপ্রণয়ী মনে করিবে—অথবা অন্যা-হইলে মনে করিত—তুমি করিবে না। আমি কোন বিশেষ ত্ৰতে নিযুক্ত আছি—যদি তৎপ্রতি অবহেলা করি, তবে আমি কুলাঙ্গার। তৎসাধন জন্ত আমি গুরুর নিকট প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইয়াছি যে, তোমার সহিত এ স্থানে সাক্ষাৎ কাঁৱৰ না। আমি নিশ্চিত জানি যে, আমি যে তোমার জন্য সত্যভঙ্গ করিব, তোমারও এমন সাধ নহে। অতএব এক বৎসর কোন ক্রমে দিন যাপন কর। পরে ঈশ্বর প্রসন্ন হয়েন, তবে অচিরাং তোমাকে রাজপুরবধূ করিয়া আত্মমুখ সম্পূর্ণ করিব। এই অল্পবয়স্ক প্ৰগলভবুদ্ধি বালিকাহস্তে উত্তর প্রেরণ করিও।” - মৃণালিনী পত্র পড়িয়া গিরিজায়াকে কহিলেন, “গিরিজায়া! আমার পাতা লেখনী কিছুই নাই যে উত্তর লিখি। তুমি মুখে আমার প্রত্যুত্তর লইয়া যাওঁ। তুমি বিশ্বাস, পুরস্কার স্বরূপ আমার অঙ্গের অলঙ্কার দিতেছি।” * গিরিজায়া কহিল, “উত্তর কাহার নিকট লইয়া যাইব ? তিনি আমাকে পত্ৰ দিয়া বিদায় করিবার সময় বলিয়া দিয়াছিলেন যে, ‘আজ রাত্রেই আমাকে প্রত্যুত্তর আনিয়া দিও।' আমিও স্বীকার করিয়াছিলাম। আসিবার সময় মনে করিলাম, হয়ত তোমার নিকট লিখিবার সামগ্রী কিছুই নাই ; এজন্ত সে সকল যোটপাট করিয়া আনিবার জন্য