পারি না। যাহা ঘটিবার তাহা ঘটিয়াছে। তাই বলিয়া কি আমার পরম সুখে আমি বঞ্চিত হইব? তুমি আমার পত্নী—আমার কপালে যাই থাকুক, আমি তোমাকে গৃহিণী করিব। তুমি ক্ষণেক অপেক্ষা কর—আমি শীঘ্র আসিতেছি।” এই বলিয়া পশুপতি শীঘ্র মন্দির হইতে নিষ্ক্রান্ত হইয়া গেলেন। মনোরমার চিত্তে সংশয় জন্মিল। তিনি চিন্তিতান্তঃকরণে কিয়ৎক্ষণ মন্দির মধ্যে দাঁড়াইয়া রহিলেন। আর একবার পশুপতির নিকট বিদায় না লইয়া যাইতে পারিলেন না।
অল্পকাল পরেই পশুপতি ফিরিয়া আসিলেন। বলিলেন, “রাণাধিকে! আজি আর তুমি আমাকে ত্যাগ করিয়া যাইতে পারিবে না। আমি সকল দ্বার রুদ্ধ করিয়া আসিয়াছি।”
মনোরমা বিহঙ্গিনী পিঞ্জরে বন্ধ হইল।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ।
যবনদূত—যমদূত বা।
বেলা প্রহরেকের সময়ে নগরবাসীরা বিস্মিতলোচনে দেখিল, কোন অপরিচিত জাতীয় সপ্তদশ অশ্বারোহী পুরুষ রাজপথ অতিবাহিত করিয়া রাজভবনাভিমুখে যাইতেছে। তাহাদিগের আকারেঙ্গিত দেখিয়া নবদ্বীপবাসীরা ধন্যবাদ করিতে লাগিল। তাহাদিগের শরীর আয়ত, দীর্ঘ অথচ পুষ্ট; তাহাদিগের বর্ণ তপ্তকাঞ্চন সন্নিভ, তাহাদিগের মুখমণ্ডল বিস্তৃত, ঘনকৃষ্ণ শ্মশ্রুরাজি বিভূষিত; নয়ন প্রশস্ত, কৃষ্ণরেখাশোভিত। তাহাদিগের পরিচ্ছদ অনর্থক চাকচিক্যবিবর্জ্জিত; তাহাদিগের