পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৫

পঞ্চম পরিচ্ছেদ।


জাল ছিঁড়িল।

 বঙ্গেশ্বরপুরে অধিষ্ঠিত হইয়াই বখ্‌তিয়ার খিলিজি ধর্ম্মাধিকারের নিকট দূত প্রেরণ করিলেন। ধর্ম্মাধিকারের সহিত সাক্ষাতের অভিলাষ জানাইলেন। তাঁহার সহিত যবনের সন্ধি নিবন্ধন হইয়াছিল, তাহার ফলোৎপাদনের সময় উপস্থিত!

 পশুপতি ইষ্টদেবীকে প্রণাম করিয়া, কুপিতা মনোরমার নিকট বিদায় লইয়া, কদাচিৎ উল্লাসিত, কদাচিৎ সশঙ্কিত চিত্তে যবন সমীপে উপস্থিত হইলেন। বখ্‌তিয়ার খিলিজি গাত্রোত্থান করিয়া সাদরে তাঁহার অভিবাদন করিলেন এবং কুশল জিজ্ঞাসা করিলেন। পশুপতি রাজভৃত্যবর্গের রক্তনদীতে চরণ প্রক্ষালিত করিয়া আসিয়াছেন, সহর্ষে কোন উত্তর দিতে পারিলেন না। বখ্‌তিয়ার খিলিজি তাঁহার চিত্তের ভাব বুঝিতে পারিয়া কহিলেন,

 “পণ্ডিতবর! রাজসিংহাসনারোহণের পথ কুসুমাবৃত নহে। এ পথে চলিতে গেলে, বন্ধু বর্গের অস্থিমুণ্ড সর্ব্বদা পদে বিদ্ধ হয়।”

 পশুপতি কহিলেন, “সত্য। কিন্তু যাহারা বিরোধী তাহাদিগের বধ আবশ্যক। ইহারা নির্ব্বিরোধী।”

 বখ্‌তিয়ার কহিলেন, “আপনি কি শোণিত প্রবাহ দেখিয়া নিজ অঙ্গীকার স্মরণে অসুখী হইতেছেন।”

 পশুপতি কহিলেন, “যাহা স্বীকার করিয়াছি, তাহা অবশ্য