পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
মৃণালিনী।

মৃণালিনী মুদ্রাটী লইয়া গিরিজায়াকে দিতে গেলেন এবং দানের অবকাশে উহার কাণে কাণে কহিলেন, “আমার ধৈর্য্য হইতেছে। কালি পর্য্যন্ত অপেক্ষা করিতে পারিব না; তুমি আজ রাত্রে প্রহরেকের সময় আসিয়া এই গৃহের উত্তর দিকে প্রাচীর মূলে অবস্থিতি করিও; তথায় আমার সাক্ষাৎ পাইবে। তোমার বণিক যদি আসেন, সঙ্গে আনিও।”

 গিরিজায়া কহিল, “বুঝিয়াছি। আমি নিশ্চিত আসিব।”

 মণিমালিনীর নিকট প্রত্যাগতা হইলে মণিমালিনী কহিলেন, “সই ভিখারিণীকে কাণে কাণে কি বলিতেছিলে?”

 মৃণালিনীকহিলেন, “কি বলিব সই—

সই মনের কথা সই, সই মনের কথা সই।
কাণে কাণে কি কথাটি বলে দিলি ওই॥
সই ফিরে কনা সই, সই ফিরে কনা সই।
সই কথা কোস্ কথা কব, নইলে কারো নই।”

 মণিমালিনী হাসিয়া কহিলেন,

 “হলি কিলো সই?”

 মৃণালিনী কহিলেন,

 “তোমারই সই।”

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ।


দূতী।

 লক্ষ্মণাবতী নগরীর প্রদেশান্তরে যেখানে সর্ব্বধন বণিকের বাটীতে হেমচন্দ্র অবস্থিতি করিতেছিলেন, পাঠক মহাশয় সেই খানে চলুন। বণিকের গৃহদ্বারে এক অশোক বৃক্ষ বিরাজ করিতেছিল; অপরাহ্নে তাহার তলে উপবেশন করিয়া, একটী কুসু-