পাতা:মৃণালিনী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০

সপ্তম পরিচ্ছেদ।


চৌরোদ্ধরণিক।

 মহম্মদ আলি বাহির হইয়া দৃষ্টি পথাতীত হইলে অন্য একজন গুপ্ত-দ্বার নিকটে আসিয়া মৃদুস্বরে কহিল, “প্রবেশ করিব?”

 পশুপতি কহিলেন, “কর।”

 একজন চৌরোদ্ধরণিক প্রবেশ করিল। সে প্রণত হইলে পশুপতি আশীর্ব্বাদ করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেমন শান্তশীল! মঙ্গল সম্বাদ ত?”

 চৌরোদ্ধরণিক কহিল, “আপনি একে একে প্রশ্ন করুন—আমি ক্রমে সকল সম্বাদ নিবেদিতেছি।”

 পশু। “যবনদিগের অবস্থিতি স্থানে গিয়াছিলে?”

 শান্ত। “সেখানে কেহ যাইতে পারে না।”

 পশু। “কেন?”

 শান্ত। “অতি নিবিড় বন, দুর্ভেদ্য।”

 পশু। “কুঠার হস্তে বৃক্ষচ্ছেদন করিতে করিতে গেলে না কেন?”

 শান্ত। “ব্যাঘ্র ভল্লূকের দৌরাত্ম্য।”

 পশু। “সশস্ত্র গেলে না কেন?”

 শান্ত। “যে সকল কাঠুরিয়ার ব্যাঘ্র ভল্লূক বধ করিয়া বনমধ্যে প্রবেশ করিয়াছিল তাহারা সকলেই যবনহস্তে প্রাণত্যাগ করিয়াছে—কেহই ফিরিয়া আইসে নাই।”

 পশু। “তুমিও না হয় না আসিতে?”