এই দিনে হইল কিবা শুন বিবরণ।
কন্যার শিওরা[১] বইসা ডাকে ঘন ঘন॥
“উঠ কন্যা মহুয়া গো কত নিদ্রা যাও।
আমি তোর বাপ ডাকি আঁখি মেলি চাও॥
ষোল বছর পালিলাম কত দুঃখ করি।
এক কথা রাখ মোর মহুয়া সুন্দরী॥”
ঘুমাইয়া কাণের কাছে দেওয়ার গরজন।
ভিন্ দেশী অতিথির মুখ দেখয়ে স্বপন॥
চম্কিয়া উঠিল কন্যা বাপের ডাক শুনি।
চোখ্ চাইয়া দেখে কন্যা জ্বলন্ত আগুনি॥
“এই ছুরি লইয়া তুমি যাও নদীর পারে।
শুইয়া আছে নদীয়ার ঠাকুর মাইরা আইস তারে॥
ষোল বচছর পাল্লাম কন্যা কত দুঃখ করি।
আমার কথা রাখ তুমি মহুয়া সুন্দরী॥
ভিন্ দেশী দুষমন সেই যাদুমন্ত্র জানে।
বইক্ষেতে[২] হানিয়া ছুরি মারহ পরাণে॥
আমার মাথা খাওরে কন্যা আমার মাথা খাও।
দুষমনে মারিয়া ছুরি সাওরে[৩] ভাসাও॥”
ডুবিল আসমানের তারা চান্দে না যায় দেখা।
সুনালী[৪] চান্নীর[৫] রাইত আবে[৬] পড়্ল ঢাকা॥
ভাবিয়া চিন্তিয়া কন্যা কি কাম করিল।
বাপের হাতের ছুরি লইয়া ঠাকুরের কাছে গেল॥
পায়ে পড়ে মাথার চুল চক্ষে পড়ে পানি।
উপায় চিন্তিয়া[৭] কন্যা হইল উন্মাদিনী॥ ১-২৮
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৬৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মহুয়া
২৩