“শুন শুন ঠাকুর আরে শুন মোর কথা।
কঠিন তোমার প্রাণ-পিওয়া[১] কঠিন মাতা-পিতা॥
শাণে বান্ধা হিয়া আমার পাষাণে বান্ধা প্রাণ।
তোমায় বধিতে বাপে কহিল সইন্ধান॥
হাতেতে আছিল মোর বিষলক্ষের ছুরি।
তোমারে ছাড়িয়া বন্ধু আমার বুকে মারি॥
পলাইয়া মায়ের ধন নিজের দেশে যাও।
সুন্দর নারী বিয়া কইরা সুখে বইসা খাও॥
বরামণের[২] পুত্র তুমি রাজার ছাওয়াল।
তোমার সুখের ঘরে আমি হইলাম কাল॥
কি করিতে কি করিলাম নাহি পাই দিশা।
অরদিশ[৩] হইয়া আমি ॥
“মাও ছাড়ছি বাপ ছাড়ছি ছাড়ছি জাতিকুল[৪]।
ভমর হইলাম আমি তুমি বনের ফুল॥
তোমার লাগিয়া কন্যা ফিরি দেশ বিদেশে।
তোমারে ছাড়িয়া কন্যা আর না যাইবাম দেশে॥
বি কইবাম বাপ মায়ে কেমনে যাইবাম ঘরে।
জাতি নাশ কর্লাম কন্যা তোমারে পাইবার তরে॥
তোমায় যদি না পাই কন্যা আর না যাইবাম বাড়ী।
এই হাতে মার লো কন্যা আমার গলায় ছুরি॥”
“পইড়া থাকুক বাপ মাও পইড়া থাকুক ঘর[৫]।
তোমারে লইয়া বন্ধু যাইবাম দেশান্তর॥
দুই আঁখি যে দিগে যায় যাইবাম সেই খানে।
আমার সঙ্গে চল বন্ধু যাইবাম গহীন বনে॥
বাপের আছে তাজি ঘোড়া ঐ না নদীর পারে।
দুইজনেতে উঠ্যা চল যাইগো দেশান্তরে॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৬৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মহুয়া
২৫
4-1918 B.T.