পাতা:য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র

থাকতে পারে না; চার দিক থেকে প্রশংসার কোলাহল তাকে জাগিয়ে তোলে; রূপের আলো দেখবা মাত্র ভক্তদের পতঙ্গহৃদয় চার দিক থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে তাকে ঘিরে ফেলে ও রূপসী যে দিকে যান সেই ফড়িঙের দল তার চতুর্দিকে লাফিয়ে চলতে থাকে। ball roomএ তাঁর দর অত্যন্ত চড়া; নাচে তাঁর সাহচর্য-সুখ পাবার জন্যে দরখাস্তের পর দরখাস্ত আসছে; তাঁর রুমাল কুড়িয়ে দেবার জন্যে শত শত হাত প্রস্তুত, তাঁর তিলমাত্র কাজ করে দেবার জন্য শত শত কায়মনোবাক্যে দিবারাত্রি নিযুক্ত। রূপবান পুরুষদেরও যথোচিত আদর আছে, তারা এখানকার drawing roomএর darling হয়ে ওঠে, যুবতীরা তাদের আদর দিয়ে দিয়ে অনর্থ করে তোলে। আমি দেখছি, এ কথা শুনে তোমার এখানে আসতে অত্যন্ত লোভ হবে। তোমার মতো সুপুরুষ এখানকার মতো রূপমুগ্ধ দেশে এলে এখানকার হৃদয়রাজ্যে এত ভাঙচুর লোকসান করতে পার যে, সে একটা নিদারুণ করুণরসোদ্দীপক ব্যাপার হয়ে ওঠে। তা হলে চতুর্দিক থেকে—

ঘন
নিশ্বাস প্রলয়বায়ু, অশ্রুবারিধারা
আসার, জীমূতমন্ত্র হাহাকাররব—

তুলে দেও। তা হলে তোমার হৃদয়টিকেও খরচের খাতায় লিখতে হয়; এত নিশ্বাস-প্রলয়বায়ুতে ও অশ্রুবারিধারা-আসারে কেউ যদি টিঁকে থাকতে পারেন তা হলে তেমন লোকের মন spiritএ ডুবিয়ে যত্নপূর্বক preserve করে British Museum রেখে দেওয়া উচিত, তেমন মন ফরমাস দিলে পাওয়া যায় না। বিলেতে রূপের চেয়ে recommendation letter খুব কম আছে। এ রকম অবস্থায় রূপ কখনো লুকিয়ে থাকতে পারে না। যা হোক,

৯৩