পাতা:য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সপ্তম পত্র

দেখো, তোমাকে যে পত্র লিখেছি তা ভারতীতে আমার ইচ্ছামতে প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে এক জায়গায় স্ত্রীস্বাধীনতা সম্বন্ধে আমার মত প্রকাশ করেছিলুম, সম্পাদক-মহাশয় তার বিরুদ্ধে এক নোটের বাণ বর্ষণ করেছেন। কিন্তু সেটা সম্পাদক-মহাশয়ের লেখা কি না সে বিষয়ে আমার ঘোরতর সন্দেহ বর্তমান। তিনি যে সেটা লেখেন নি তার প্রধান প্রমাণ হচ্ছে এই যে, সম্পাদকমহাশয়ের গাম্ভীর্য এতদূর বিচলিত হতে আর কখনো দেখি নি; দ্বিতীয়তঃ যে-সকল যুক্তি প্রয়োগ করা হয়েছে তা সম্পাদকমহাশয়ের লেখনীর অযোগ্য। খুব সম্ভব, কোনো উদ্ধত যুবক সম্পাদকের ক্ষমতা নিজের তরুণ স্কন্ধে গ্রহণ করে ভারতীর এক কোণে অলক্ষিত ভাবে এই নোটটি গুঁজে দিয়েছেন। নোটে খোঁচা মারার প্রধান গুণ হচ্ছে যে, তার উত্তর দিতে বসতে প্রবৃত্তি হয় না। একটা নোটের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধং দেহি’ ব’লে কোমর বেঁধে আড়ম্বর করা শোভা পায় না। গোলা দিয়ে ওড়াতে এলে রীতিমত যুদ্ধসজ্জা করতে হয়, কিন্তু তুড়ি দিয়ে ওড়াতে এলে আর কথাটি নেই। যা হোক, নানা কারণে একটা উত্তর দিতে প্রবৃত্ত হলুম। লেখক-মহাশয় আমার মুখে কতকগুলো কথা গুঁজে দিয়েছেন, যা আমি একেবারেই বলি নি;[১] তিনি কতকগুলো কথা নিয়ে অনর্গল বকাবকি করে গিয়েছেন যা একেবারে উত্থাপন করবারই কোনো আবশ্যক ছিল না।[২] তিনি অনেক জায়গায় তলোয়ার নিয়ে তুমুল আস্ফালন করেছেন, কিন্তু তার ঘা লেগেছে বাতাসের গায়ে। আবার অনেক জায়গায় তিনি আমার লেখার বিরুদ্ধে বন্দুক ছুঁড়েছেন; তার থেকে আগুনও ছুটেছে, ধোঁওয়াও বেরিয়েছে, শব্দও হয়েছে, কিন্তু

১১০
  1.  
  2.