পাতা:য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম পত্র: পাদটীকা
১২৭

     ৩ পাছে স্বামীর মনে কু-আশঙ্কা স্থান পায়। স্বামীর মনে হয়তো এইরূপ একটা মাত্রা নির্ধারিত আছে যে, পরপুরুষদের সহিত স্ত্রীলোকের এইটুকু পর্যন্ত মেলা-মেশাই ভালো, তাহা অপেক্ষা বেশি ঘনিষ্ঠতা ভালো না। যে স্ত্রী স্বামীকে ভালোবাসে সে স্ত্রী সেই মাত্রাটি অতিক্রম করিয়া স্বামীর মনে আঘাত দিতে কুণ্ঠিত হইবে না তো আর কে হইবে? সে মাত্রা কতটুকু স্বামীই তাহা জানে, স্ত্রী তাহা জানে না, সুতরাং যদি স্বামীর মনঃপীড়া জন্মানো স্ত্রীর প্রার্থনীয় না হয় তবে শেষোক্তের উচিত পরপুরুষদের সহিত আমোদ-প্রমোদে মেলা-মেশা না করা— যে স্ত্রী স্বামীকে অধিক ভালোবাসে তাহার তাহাতে প্রবৃত্তিই হয় না। সেক‍্স‍্পিয়রের উইণ্টরস্ টেলে লিয়ণ্টীসের স্ত্রী হর‍্মিওনী যখন লিয় টসের একজন বন্ধুর সহিত সেক্‌হ্যাণ্ড্, করিতেছেন তখন লিয়ণ্টীস আপন মনে বলিতেছেন—

    Too hot, too hot!
    To mingle friendship far is mingling bloods.
    I have tremor cordis [হৃৎকম্প] on me; my heart dances,
    But not for joy, not joy. This entertainment
    May a free face put on; derive a liberty
    From heartiness, from bounty, fertile bosom,
    And well become the agent. ‘T’ may, I grant;
    But to be paddling palms and pinching fingers,
    As now they are, and making practis’d smiles
    As in a looking-glass; and then to sigh, as ’twere
    The mort o ‘th’ deer. [হরিণের মরণকালীন দীর্ঘনিশ্বাস]
    O, that is entertainment
    My bosom likes not, nor my brows!

    এই তো গেল সেক‍্স‍্পিয়র—আমাদের কোনো সুবিচক্ষণ সাহেব-বন্ধুর মুখে আমরা স্বকর্ণে এইরূপ শুনিয়াছি—‘কী! আমার স্ত্রীর গাত্র অন্য লোকে স্পর্শ করিবে, আমি অন্য লোকের স্ত্রীর গাত্র স্পর্শ করিব—ছি!’

     ৪ স্বামী মনে করিতে পারে যে, আমি আমার স্ত্রীর চরিত্র যেরূপ জানি তাহাতে সে পরপুরুষদের সহিত সহস্র মেলা-মেশা করিলেও কোনো দোষের