পাতা:য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র

চশমা পরেন— সাজগোজের বড়ো আড়ম্বর নেই। নিজে রাঁধেন, বাড়ির কাজকর্ম করেন (ছেলেপিলে নেই, সুতরাং কাজকর্ম বড়ো বেশি নয়)— আমাকে খুব যত্ন করতেন। খুব অল্প দিনেতেই বোঝা যায় যে, Mr. ও Mrs.এর মধ্যে বড়ো ভালোবাসা নেই। কিন্তু তাই বলে যে দুজনের মধ্যে খুব ঝগড়াঝাঁটি হয় তা নয়, নিঃশব্দে সংসার চলে যাচ্ছে। Mrs. B কখনো Mr. Bর studyতে যান না, সমস্ত দিনের মধ্যে খাবার সময় ছাড়া দুজনের মধ্যে আর দেখাশুনা হয় না, খাবার সময়ে দুজনে চুপচাপ বসে থাকেন, খেতে খেতে আমার সঙ্গে গল্প করেন, কিন্তু দুজনে পরস্পর গল্প করেন না। Mr. Bর আলুর দরকার হয়েছে, তিনি গোঁ গোঁ করতে করতে Mrs. Bকে বললেন: Some potatoes 1 (please কথাটা বললেন না কিম্বা শোনা গেল না।) Mrs. B বলে উঠলেন: I wish you were a little more polite. Mr. B বললেন: I did say please. Mrs. B বললেন: I didn't hear it. Mr. B বললেন: It was no fault of mine that you didn't! কথাটা সমস্তটা ভালো করে শোনা গেল না, এইখেনেই দুই পক্ষ চুপ করে রইলেন। মাঝের থেকে আমি অত্যন্ত অপ্রস্তুতে পড়ে যেতেম। একদিন আমি ডিনারে যেতে একটু দেরি করেছিলেম, গিয়ে দেখি Mrs. B Mr. Bকে ধমকাচ্ছেন, অপরাধের মধ্যে Mr. B মাংসের সঙ্গে একটু বেশি আলু নিয়েছিলেন। আমাকে দেখে Mrs. B ক্ষান্ত হলেন, Mr. B সাহস পেয়ে প্রতিহিংসা তোলবার জন্যে দ্বিগুণ করে আলু নিতে লাগলেন। Mrs. B তাঁর দিকে একটি নিরুপায় মর্মভেদী কটাক্ষপাত করলেন। দুই পক্ষই দুই পক্ষকে dear বা darling বলে ভুলেও সম্বোধন করেন না, কিম্বা কারও Christian নাম ধরে ডাকেন

১৪০