পাতা:য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ পত্র

অনেকটা থিয়েটরের dress-circleএর মতো। গ্যালারির নীচে অর্থাৎ থিয়েটরের জায়গায় stall থাকে, সেইখানে মেম্বররা বসে। তাদের জন্যে দু পাশে হদ্দ দশখানি বেঞ্চি আছে, এক পাশের পাঁচখানি বেঞ্চিতে গবর্‌ন্‌মেণ্টের দল বসে, আর এক পাশের পাঁচখানি বেঞ্চিতে বিপক্ষ দল বসে, আর সুমুখের একটা প্ল্যাট্‌ফর্মের উপর একটা কেদারা আছে―সেইখানে প্রেসিডেণ্টের মতো এক জন (যাকে speaker বলে) মাথায় পরচুলা (wig) প’রে অত্যন্ত গম্ভীর ভাবে বসে থাকেন। যদি কেউ কখনো কোনো অন্যায় ব্যবহার বা কোনো আইনবিরুদ্ধ কাজ করে, তা হলে speaker উঠে তাকে বাধা দেয়। যেখানে খবরের কাগজের reporterরা সব বসে তার পেছনে খড়খড়ি-দেওয়া একটা গ্যালারি থাকে, সেইখানে মেয়েরা বসে―বাইরে থেকে মেয়েদের দেখা যায় না। দেখেছ পার্ল্যামেণ্টের মেয়েদের আব্রু কত! আমরা যখন গেলেম তখন O'donnel বলে একজন Irish member ভারতবর্ষসংক্রান্ত বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, Press Actএর বিরুদ্ধে ও অন্যান্য নানা বিষয় নিয়ে তিনি আন্দোলন করছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে Irish memberরা Houseএ অত্যন্ত অপ্রিয়―তাঁর প্রস্তাব অগ্রাহ্য হয়ে গেল। Houseএর ভাবগতিক দেখে আমি ভারী আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলেম। এমন ছেলেমানুষি সচরাচর দেখা যায় না। যখন একজন কেউ বক্তৃতা করছে তখন হয়তো অনেক মেম্বর মিলে ‘ইয়া’ ‘ইয়া’ ‘ইয়া’ ‘ইয়া’ করে জানোয়ারের মতো চীৎকার করে ডাকাডাকি করছে, হাসছে, এবং যত প্রকার অসভ্যতা করবার তা করছে। আমাদের দেশে সভায় ইস্কুলের ছোকরারাও হয়তো এমন করে না। কিন্তু তাও দেখেছি, এখানকার অন্যান্য সভায় এরকম গোলমাল চণ্ডীপাঠ হয় না। অনেক সময়ে বক্তৃতা হচ্ছে আর মেম্বরেরা কপালের ওপর

৪১