পাতা:য়ুরোপ-যাত্রীর ডায়ারি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
য়ুরোপ-যাত্রীর ডায়ারি : খসড়া

প্রভেদ। অথচ বুঝতে পারছি কেন সে চটছে। আমি দেছি লােটার আচরণ যেমনি হােক-না কেন, বড্ড গরিব এবং বড়ো আশা করে সঙ্গে সঙ্গে চলেছে। Gibbs বলছে: He must be very hard up to follow us thus but no Englishman would do it। তার আচরণ এত খারাপ লাগল যে তার দারিদ্র্য দেখে দয়া হল না। বেশ বােঝা যায় একজন ইংরেজ ভারতবর্ষে গিয়ে আমাদের দিশি লােকের প্রতি ক্রমে ক্রমে কিরকম করে চটে যায়― বিলিতি নিয়মানুসারে যেগুলাে ক্রটি সেইগুলাে এত দিক থেকে এত চোখে পড়ে যে, আমাদের জাতির যেগুলাে বিশেষ গুণ সেগুলাে তারা দেখতে পায় না। বিলিতি দোষ দেখলে তারা এত আপত্তি করত না, কিন্তু অপরিচিত দোষ তাদের অসহ্য বােধ হয়। শহরটা নতুন রকমের। পাথরে বাঁধানাে সরু রাস্তা—একবার পাহাড়ের উপরে উঠছে একবার নীচে নাবছে— বিশ্রী গন্ধ― গােলমাল― কী এক রকমের। একটা Roman Catholic Churchএর মধ্যে প্রবেশ করে দেখলুম— প্রকাণ্ড ঘর, চারি দিকে খৃস্ট এবং সেণ্ট্‌দের মূর্তি, বেদীর সামনে বাতি জ্বলছে; এক রকম গাম্ভীর্যজনক অন্ধকার, ঘর গম্‌ গম্ করছে, বেদীর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে মেয়ে পুরুষে গুন্ গুন্ স্বরে স্তব পাঠ করছে। সবসুদ্ধ জড়িয়ে মনকে যেন কী এক রকম oppress করতে থাকে। এখানকার মেয়েদের শিরােভূষা অদ্ভুত রকমের, গাড়ির hoodএর মতাে এক রকম overhanging ঘােমটা। খুব ছােটো হােটো মেয়েদের বেশ দেখতে― জ্বল্‌জ্বলে কালাে চোখ― দেখে বেলিকে মনে পড়ছিল― কিন্তু একটিও ভালাে দেখতে বড় মেয়ে দেখলুম না। পথে যেতে যেতে Australian বন্ধুর সঙ্গে দেখা হল। বলে: Grand Hotelএ এসে dinner কোরো, তা হলে আর-

২০৯