পাতা:য়ুরোপ-যাত্রীর ডায়ারি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্রন্থপরিচয়

 শ্রদ্ধেয়া ইন্দিরাদেবী -কর্তৃক রবীন্দ্রসদনে উপহৃত মূল দিনলিপির ন্যায় বর্তমান গ্রন্থে সংকলনযােগ্য মনে না হইলেও, উপস্থিত প্রসঙ্গে আর-একখানি রবীন্দ্র-পাণ্ডুলিপির অবশ্যই উল্লেখ করিতে হয়। রবীন্দ্রনাথের হাতে লেখা এই মূল্যবান পাণ্ডুলিপি কবি যতীন্দ্রমােহন বাগচীর নিকট হইতে সংগৃহীত; মনে হয়, ইহা মূল দিনলিপি ও ‘সাধনা’ পত্রে ‘ডায়ারি’র আংশিক প্রকাশ উভয়ের অন্তর্‌বর্তীকালীন। এই খাতাখানির প্রথমাবধি যােলােটি পাতায়, বত্রিশ পৃষ্ঠায়, মুদ্রিত ‘ডায়ারি’র প্রথম খণ্ডের প্রায় পূর্ণ পরিণত রূপ অবিচ্ছেদে পাওয়া যাইতেছে; রচনাশেষে কবির হস্তাক্ষরে তারিখ দেখা যায়: ১৫ই মাঘ। মঙ্গলবার। ১৮৯১।— পরবর্তী বাইশটি পাতায় বা চুয়াল্লিশ পৃষ্ঠায় ডয়ারির দ্বিতীয় খণ্ডের পূর্ণতর (মূল দিনলিপির তুলনায়) পাঠ লিপিবদ্ধ রহিয়াছে; ইহারও সব-শেষে কবি স্থানকালের নির্দেশ দিয়াছেন: ১৪ ফেব্রুয়ারি, শিলাইদহ। ১৮৯১। ৩ ফাল্গুন।—অর্থাৎ, ১৮৯০ নভেম্বরে কবি দ্বিতীয়বারের বিলাত-যাত্রা হইতে ফিরিবার সঙ্গে সঙ্গে যে ডায়ারি লেখা সমাপ্ত হয়, ১৮৯১ সনের ফেব্রুয়ারি মাসে রবীন্দ্রনাথ তাহার প্রকাশযােগ্য রূপান্তর সমাধা করেন আর ঐ বৎসরেই নভেম্বর-ডিসেম্বরে (বাংলা অগ্রহায়ণ ১২৯৮) ‘সাধনা’ আত্মপ্রকাশ করিলে উহার প্রথম সংখ্যা হইতেই আরও রূপান্তরিত করিয়া ‘ডায়ারি’র কিয়দংশ (দ্বিতীয় খণ্ড} ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করিতে থাকেন। ‘ডায়ারি’র প্রথম খণ্ড -স্বরূপ ভূমিকা’টি, সাধনার সুচনা না হইতেই ১২৯৮ বৈশাখে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়— ইহা আমাদের জানা আছে।

 মূল দিনলিপি বা ‘খসড়া’, মুদ্রণপূর্ব অন্য পাণ্ডুলিপি, ‘সাধনা’য় মুদ্রিত পাঠ এবং প্রথম-প্রচারিত দুই খণ্ড গ্রন্থ— কোনাে একটি পাঠ অন্যান্যের যথাযথ প্রতিরূপ বা প্রতিলিপি বলা যায় না— বিষয়ে বা বক্তব্যে মূলতঃ ঐক্য থাকিলেও, ভাষায় ভঙ্গীতে শব্দচয়নে এবং বক্তব্যের সংক্ষেপণে বা অলংকরণে পদে পদেই ভিন্নতা দেখা যায়। ‘খসড়া’র কথা ছাড়িয়া দিলেও, রবীন্দ্রনাথ প্রত্যেকবারই রচনায় কিছু না-কিছু যোগ বিয়ােগ ও পাঠপরিবর্তন করিয়াছেন। যতীন্দ্রমােহন বাগচীর নিকট হইতে সংগৃহীত, অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপির যে-দুটি অংশের প্রতিরূপ এই গ্রন্থে মুদ্রিত হইল, তাহার প্রথমটি যেমন মুদ্রিত পাঠের

২৬৩