যাই হােক, আমরা আপনাকে বােঝাতে পারি যে, হিঁদুয়ানির সমস্তই ভালাে, কারণ হিঁদুয়ানির সমস্তই ধর্মনিয়ম; যুক্তির দ্বারা যদি বা কারও বিশ্বাস জন্মে যে কোনাে-একটা সমাজপ্রথা সমাজের পক্ষে অমঙ্গলজনক তথাপি সেটা পালন করা ধর্ম, কারণ আমাদের সমস্ত সমাজনিয়মই ধর্মানুগত অতএব যুক্তি এবং দৃষ্টান্ত দ্বারা ধর্মকে অধর্ম বলে দাঁড় করানো যেতে পারে না; আপনাকে এবং আপনার শিষ্যদের বােঝাতে পারি যে, ব্রাহ্মণের ব্রহ্মণ্য-নামক এক প্রকার অ্যানিম্ল্-ম্যাগ্নেটিস্ম্, অথবা আধ্যাত্মিক তেজ অথবা কী-একটা অনির্বচনীয় শক্তি রক্ষার পক্ষে জাতিভেদ একান্ত আবশ্যক— কিন্তু প্রকৃতিকে এরূপ বিপরীত ব্যাখ্যায় ভােলাতে পারব না। সে কোনাে উত্তর দেবে না, কেবল মনে মনে বলবে— ‘ভালাে, তবে আধ্যাত্মিক তেজ রক্ষা করো এবং― মরো।’
কিন্তু এখন সমস্ত জাতিকে রক্ষা করতে হবে, কেবল টিকি এবং পৈতেটুকুকে নয়। আপনার সমগ্র মনুষ্যত্বকে মানবের সংস্রবে আনতে হবে, কেবল প্রাণহীন কঠিন ব্রহ্মণ্যের মধ্যে তাকে আগলে রেখে অজ্ঞতা এবং অন্ধ দাম্ভিকতার দ্বারা তাকে বনেদি বংশের অত্যন্ত আদুরে ছেলেটির মতাে স্থূল এবং অকর্মণ্য করে তুললে আর অধিক দিন চলবে না।
কিন্তু সংকীর্ণতা এবং নির্জীবতা অনেকটা পরিমাণে নিরাপদ সে কথা অস্বীকার করা যায় না। যে সমাজে মানবপ্রকৃতির সম্যক্ স্ফূর্তি এবং জীবনের প্রবাহ আছে সে সমাজকে বিস্তর উপদ্রব সইতে হয় সে কথা সত্য। যেখানে জীবন অধিক সেখানে স্বাধীনতা অধিক, এবং সেখানে বৈচিত্র অধিক। সেখানে ভালাে মন্দ দু’ই প্রবল। যদি মানুষের নখদন্ত উৎপাটন করে আহার কমিয়ে দিয়ে দুই বেলা চাবুকের ভয় দেখানাে হয় তা হলে এক দল