পাতা:যোগাযোগ- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যোগাযোগ

 “তাই ভালো, অপরাধ তােমরাও করেছ আমিও করেছি। একসঙ্গেই ফল ভােগ করব।”

 “আচ্ছা বেশ, তাহলে বলে দেব তােমার জন্যে পালকি। বড়ঠাকুরের হুকুম হয়েছে, তােমাকে বাধা দেওয়া হবে না। এখন তবে তােমার জিনিসগুলি গুছিয়ে দিই। ওগুলাে নিয়ে যে ঘেমে উঠলে।”

 দুজনে গােছাতে লেগে গেল।

 এমন সময় কানে এল বাইরে জুতাের মচ মচ ধ্বনি। মোতির মা দিল দৌড়।

 মধুসূদন ঘরে ঢুকেই বললে, “বড়ােবউ, তুমি যেতে পারবে না।”

 “কেন যেতে পারব না?”

 “আমি হুকুম করছি বলে।”

 “আচ্ছা, তাহলে যাব না। তার পরে আর কী হুকুম বলো।”

 “বন্ধ করে তােমার জিনিস প্যাক করা।”

 “এই বন্ধ করলুম।” বলে কুমু উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। মধুসূদন বললে, “শােনাে, শােনাে।”

 তখনই কুমু ফিরে এসে বললে, “কী বলো।”

 বিশেষ কিছুই বলবার ছিল না। তবু একটু ভেবে বললে, “তােমার জন্যে আংটি এনেছি।”

 “আমার যে-আংটির দরকার ছিল সে তুমি পরতে বারণ করেছ, আর আমার আংটির দরকার নেই।”

 “একবার দেখোই-না চেয়ে।”

 মধুসুদন একে একে কৌটো খুলে দেখালে। কুমু একটি কথা ও বললে না।

 “এর যেটা তােমার পছন্দ সেইটেই তুমি পরতে পার।”

১৪৩