কুমু হাসলে, বললে, “কত ভাগ্যে এমন দেবর পেয়েছি।”
“আর তোমার এই জা-টি বুঝি ভাগ্যস্থানে রাহু না কেতু।”
“তোমাদের একজনের নাম করলে আর-একজনের নাম করবার দরকার হয় না।”
মোতির মা ডান হাত দিয়ে কুমুর গলা জড়িয়ে ধরে বললে, “আমার একটা অনুরোধ আছে তোমার কাছে।”
“কী বলো।”
“আমার সঙ্গে তুমি ‘মনের কথা’ পাতাও।”
“সে বেশ কথা, ভাই। প্রথম থেকে মনে-মনে পাতানো হয়েই গেছে।”
“তাহলে আমার কাছে কিছু চেপে রেখো না। আজ তুমি অমন মুখটি করে কেন আছ কিছুই বুঝতে পারছি নে।”
খানিকক্ষণ মোতির মার মুখের দিকে চেয়ে থেকে কুমু বললে, “ঠিক কথা বলব? নিজেকে আমার কেমন ভয় করছে।”
“সে কী কথা! নিজেকে কিসের ভয়?”
“আমি এতদিন নিজেকে যা মনে করতুম আজ হঠাৎ দেখছি তা নই। মনের মধ্যে সমস্ত গুছিয়ে নিয়ে নিশ্চিন্ত হয়েই এসেছিলুম। দাদারা যখন দ্বিধা করেছেন, আমি জোর করেই নতুন পথে পা বাড়িয়েছি। কিন্তু যে-মানুষটা ভরসা করে বেরোেল তাকে আজ কোথাও দেখতে পাচ্ছি নে।”
“তুমি ভালোবাসতে পারছ না। আচ্ছা, আমার কাছে লুকিয়ো না, সত্যি করে বলো, কাউকে কি ভালোবেসেছ? ভালোবাসা কাকে বলে তুমি কি জান?”
“যদি বলি জানি, তুমি হাসবে। সূর্য ওঠবার আগে যেমন আলো হয় আমার সমস্ত আকাশ ভরে ভালোবাসা তেমনি করেই জেগেছিল।