“কেন, খুকী কি মধুসূদনের পাটখাটা মজুর? নিজের ঘরে যাবে তার আবার হুকুম কিসের?”
আহার সেরে নবীন একলা এল বিপ্রদাসের ঘরে। বিপ্রদাস বললে, “কুমু তোমাকে স্নেহ করে।”
নবীন বললে, “তা করেন। বোধ করি আমি অযোগ্য বলেই ওঁর স্নেহ এত বেশি।”
“তাঁর সম্বন্ধে তোমাকে কিছু বলতে চাই, তুমি আমাকে কোনো কথা লুকিয়ো না।”
“কোনো কথা আমার নেই যা আপনাকে বলতে আমার বাধবে।”
“কুমু যে এখানে এসেছে আমার মনে হচ্ছে তার মধ্যে যেন বাঁকা কিছু আছে।”
“আপনি ঠিকই বুঝেছেন। যাঁর অনাদর কল্পনা করা যায় না সংসারে তাঁরও অনাদর ঘটে।”
“অনাদর ঘটেছে তবে?”
“সেই লজ্জায় এসেছি। আর তো কিছুই পারি নে, পায়ের ধুলো নিয়ে মনে মনে মাপ চাই।”
“কুমু যদি আজই স্বামীর ঘরে ফিরে যায় তাতে ক্ষতি আছে কি?”
“সত্যি কথা বলি, যেতে বলতে সাহস করি নে।”
ঠিক যে কী হয়েছে বিপ্রদাস সে-কথা নবীনকে জিজ্ঞাসা করলে না। মনে করলে, জিজ্ঞাসা করা অন্যায় হবে। কুমুকেও প্রশ্ন করে কোনো কথা বের করতে বিপ্রদাসের অভিরুচি নেই। মনের মধ্যে ছটফট করতে লাগল। কালুকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলে, “তুমি তো ওদের বাড়িতে যাওয়া-আসা কর, মধুসূদনের সম্বন্ধে তুমি বোধ হয় কিছু জান।”
“কিছু আভাস পেয়েছি, কিন্তু সম্পূর্ণ না জেনে তোমার কাছে কিছু