“যদি তোকে জোর করে নিয়ে যাবার চেষ্টা হয়, তুই জোর করে সামলাতে পারবি?”
“তোমার উপর উৎপাত যদি না হয় তো খুব পারব।”
“এইজন্যে জিজ্ঞাসা করছি যে, যদি শেষকালে ফিরে যেতেই হয় তা হলে যত দেরি করে যাবি ততই সেটা বিশ্রী হয়ে উঠবে। ওদের সঙ্গে সম্বন্ধ সূত্র তোর মনকে কোথাও কিছুমাত্র জড়িয়েছে কি?”
“কিছুমাত্র না। কেবল আমি নবীনকে, মোতির মাকে, হাবলুকে ভালোবাসি। কিন্তু তারা ঠিক যেন অন্য বাড়ির লোক।”
“দেখ্ কুমু, ওরা উৎপাত করবে। সমাজের জোরে, আইনের জোরে উৎপাত করবার ক্ষমতা ওদের আছে। সেইজন্যেই সেটাকে অগ্রাহ্য করা চাই। করতে গেলেই লজ্জা সংকোচ ভয় সমস্ত বিসর্জন দিয়ে লোকসমাজের সামনে দাঁড়াতে হবে, ঘরে-বাইরে চারি দিকে নিন্দের তুফান উঠবে, তার মাঝখানে মাথা তুলে তোর ঠিক থাকা চাই।”
“দাদা, তাতে তোমার অনিষ্ট, তোমার অশান্তি হবে না?”
“অনিষ্ট অশান্তি কাকে তুই বলিস কুমু? তুই যদি অসম্মানের মধ্যে ডুবে থাকিস তার চেয়ে অনিষ্ট আমার আর কী হতে পারে? যদি জানি যে, যে-ঘরে তুই আছিস সে তোর ঘর হয়ে উঠল না, তোর উপর যার একান্ত অধিকার সে তোর একান্ত পর, তবে আমার পক্ষে তার চেয়ে অশান্তি ভাবতে পারি নে। বাবা তোকে খুব ভালোবাসতেন, কিন্তু তখনকার দিনে কর্তারা থাকতেন দূরে দূরে। তোর পক্ষে পড়াশুনোর দরকার আছে তা তিনি মনেই করতেন না। আমিই নিজে গোড়া থেকে তোকে শিখিয়েছি, তোকে মানুষ করে তুলেছি। তোর বাপ-মার চেয়ে আমি কোনো অংশে কম না। সেই মানুষ করে তোলার দায়িত্ব যে কী