গাড়ি ঘোড়ায় চড়িয়া, কখন বা টম্টম্ হাঁকাইয়া, কলিকাতার রাস্তায় সে ছুটাুছুটী করিয়া থাকে, কখন বা মলিন বস্ত্রে শরীর আবৃত করিয়া চটিজুতা পরিয়া রাস্তায় গমন করিবার কালীন, পূর্ব্ব-নিয়োজিত সহিস-কোচবানগণের বেতন বাকী থাকা প্রযুক্ত, তাহাদের নিকট “সুমধুর” বাক্য শ্রবণ করিয়া থাকে, বা কখন কখন তাহাদিগের “আদরের” চড় চাপড় সহ্য করিয়া ধীরে ধীরে আপন পৃষ্ঠে হস্ত বুলাইতে থাকে। কখন বা বেশ্য়া-পল্লীর ভিতর গমন করিয়া সুরাদেবীর প্রকট-শিষ্য হইয়া বার-নারীদিগের “সুমধুর আদরের” প্রেম-সাগরে সন্তরণ করিয়া থাকে, কখন বা তাহাদিগের দেনা পরিশোধ করিতে না পারিয়া হাসিতে হাসিতে তাহাদিগের “আদর-মিশ্রিত” পাদুকার ধূলি সকল আপন মস্তক হইতে ঝাড়িতে ঝাড়িতে স্থানান্তরে প্রস্থান করে। গোবিন্দ চন্দ্র এইরূপে কলিকাতার ভিতর অনেক দিবস পর্য্যন্ত আপনার লীলা খেলা করিয়া আসিতেছে। তাহার এইরূপ লীলা খেলা করিতে যে সকল অর্থ ব্যয়িত হয়, তাহার সমস্তই জুয়াচুরি-লব্ধ। সে অনেকরূপ জুয়াচুরির নূতন উপায় বাহির করিয়া অনেক লোককে ঠকাইয়াছে, এবং ক্রমে সেই সকল জুয়াচুরির বিষয় অনেকে অবগত হইবার লঙ্গে সঙ্গে তাহা পরিত্যাগ করিয়া অপর উপায় অবলম্বন করিয়াছে। আজকাল সে যে জুয়াচুরির উপায় অবলম্বন করিয়া আপনার খরচ-পত্রের সংস্থান করিতেছে, তাহার বিবরণ নিম্নে প্রদত্ত হইল।
গোবিন্দ যে স্থানে বাস করে, সেই স্থানে পোষ্টাফিসের যে পিয়ন চিঠি-পত্র বিলি করিয়া থাকে, তাহার সহিত একটু আলাপ করিবার মানসে সে প্রথমতঃ সুযোগ অনুসন্ধান করে।