পাতা:রক্তকরবী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩৭ পর দু হাত, দু হাতের পর তিন হাত। তাল তাল সোনা তুলে আনছি— এক তালের পর দু তাল, দু তালের পর তিন তাল । যক্ষপুরে অঙ্কের পর অঙ্ক সার বেঁধে চলেছে, কোনো অর্থে পৌঁছয় না। তাই ওদের কাছে আমরা মানুষ নই, কেবল সংখ্যা । ফাগু ভাই, তুমি কোন সংখ্যা ? 8br(k ফাগুলাল পিঠের কাপড়ে দাগা আছে, আমি ৪৭ফ। বিশু আমি ৬৯ঙ । গাঁয়ে ছিলুম মানুষ, এখানে হয়েছি দশ-পচিশের ছক। বুকের উপর দিয়ে জুয়োখেলা চলছে। চন্দ্রা বেয়াই, ওদের সোনা তো অনেক জমল, আরো কী দরকার ? বিশু দরকার বলে পদার্থের শেষ আছে। খাওয়ার দরকার আছে, ৪৯০ পঙক্তি ৪৮১-৪৯০ S. পর দুই হাত, দুই হাতের পর তিন হাত, তারি বা শেষ কোথায় ? তারপরে সেখান থেকে তাল তাল সোনা নিয়ে মকররাজের ভাণ্ডারে জমা করচি— একতালের পর দুই তাল, দুই তালের পর তিন তাল। যক্ষপুরী নিছক অঙ্কশাস্ত্রের দেশ, এখানে অঙ্কের পিছনে অঙ্ক সার বেঁধে চলতে থাকে। তার কোনো মানে নেই। সেইজন্যেই ওদের কাছে আমরা ত মানুষ নই আমরা সংখ্যা। বিশু ভাই তুমি কোন সংখ্যা ? এই যে আমার পিঠের কাপড়ে দাগ মারা আছে, আমি ৪৭ফ । আমি হচ্চি ৬৯ঙ । পৃথিবীতে আমরা ছিলুম মানুষ, যক্ষপুরীতে আমরা হয়েচি দশ পচিশ খেলার খুঁটি। আমাদের যে অতখানি খোওয়া গেছে সেটা ভোলাতে হবে ত— অতএব বেয়ান— ওদের সোনা অনেক ত জমা হয়েচে, আর কি দরকার ? যে জিনিষের দরকার আছে তার শেষ আছে, যার দরকার নেই তারই শেষ নেই। খাওয়ার সীমা আছে, २ পর দুই হাত, দুই হাতের পর তিন হাত । সেখান থেকে তাল তাল সোনা এনে মকররাজের ভাণ্ডারে তুলচি, এক তালের পর দুই তাল, দুই তালের পর তিন তাল। যক্ষপুরী অঙ্কশাস্ত্রের দেশ, এখানে অঙ্কের পিছনে অঙ্ক সার বেঁধে চলে, তার কোনো মানে নেই। তাই ত ওদের কাছে আমরা মানুষ নই, কেবল সংখ্যা । ফাগু ভাই, তুমি কোন সংখ্যা ?