পাতা:রক্তকরবী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

このこ ছুটিয়ে নিয়ে যায় ; লাফ-দেওয়া বাঘের দুই ভুরুর মাঝখানে তীর মেরে সে আমার ভয়কে উড়িয়ে দিয়ে হা হা করে হাসে । আমাদের নাগাই নদীতে ঝাপিয়ে পড়ে স্রোতটাকে যেমন সে তোলপাড় করে, আমাকে নিয়ে তেমনি সে তোলপাড় করতে থাকে। প্রাণ নিয়ে সর্বস্ব পণ করে সে হার-জিতের খেলা খেলে । সেই খেলাতেই আমাকে জিতে নিয়েছে। একদিন তুমিও তো তার মধ্যে ছিলে, কিন্তু কী মনে করে বাজি খেলার ভিড় থেকে একলা বেরিয়ে গেলে । যাবার সময় কেমন করে আমার মুখের দিকে তাকালে বুঝতে পারলুম না— তার পরে কতকাল খোঁজ পাই নি। কোথায় তুমি গেলে বলো তো । পঙক্তি ৬৭১-৬৮০ S ছুটিয়ে নিয়ে যায় ; লাফ-দেওয়া বাঘের দুই ভুরুর মাঝখানে তীর মেরে সে আমার ভয়কে উড়িয়ে দিয়ে হাসে ; শ্রাবণের রাতে হঠাৎ বান ডেকে এলে ভাঙনের মুখে সে বাঁধ বাঁধতে ছোটে ; আমাদের গ্রামের নাগাই নদীতে যখন প্রথম বর্ষার ধারা এসে পৌছয় তখন রঞ্জন তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে সাতার কেটে স্রোতটাকে যেমন তোলপাড় করে তোলে, আমাকে কাছে পেলে দিতে থাকে। প্রাণ নিয়ে সে হারজিতের খেলা করে ; ভয় নেই ভাবনা নেই ; বারে বারে সে জিতেই এসেচে, – সেই খেলাতেই সে আমাকে জিতে নিয়েচে । জিতে নিয়ে তার হাসি, আমি তার সেই কলহাসিই শুনে এসেচি। কিন্তু, পাগলা, সেই বাজি-জিতের খেলার ভিতর থেকে কে তোমাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় ? খেলার ঘরে হাজার বাতি জ্বলচে, সেখান থেকে তুমি বেরিয়ে যাও, গহন রাতের মধ্যে, তারার আলোর ইসারা মেনে--- সেখান থেকে আমাদের হাসির মাঝখানে যে বাঁশির সুর নিয়ে এস তাই শুনে আমার মনের মধ্যে আজ গান জেগেচে--- মরণ রে, তুহু মম শ্যাম-সমান ! পাগলা, সেই জন্যে বারে বারে আমি তোমার কাছে ছুটে আসি । কি জন্যে ? তোমার গানের ভিতর দিয়ে আমি রঞ্জনকে পেয়েছি, একেবারে ব্যথায় ভরে। যে রঞ্জনকে পাওয়া যায় তাকে তুমি দেখেছিলে, যে রঞ্জনকে পাওয়া যায় না আজ তারি কথা আমার কাছ থেকে শুনে নাও । পাগলী, আমার মনের মধ্যে তুইও ত অকূলকে জাগিয়ে তুলেচিস, তাই, তোকে বলি, দুখ জাগানিয়া। جCAG ریا\ ○br○