পাতা:রক্তকরবী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

WS)>○ পুরাণবাগীশ আমাকে কেন এনেচ, কি করতে হবে, বুঝিয়ে দাও । অধ্যাপক জগতে যা কিছু জানবার আছে সমস্তই ও জানতে চায়। বস্তুতত্ত্ব নিয়ে আমার বিদ্যে যতটুকু ছিল প্রায় শেষ হয়ে এল। পুরাণবাগীশ তুমি ত জান আমি কেবল পুরাণ আলোচনা করে এসেচি। অধ্যাপক তা বেশ ত, এখন কিছুদিন তোমার ঐ পুরাণ কথা নিয়েই চলুক। পুরাণবাগীশ তুমি এখানে আছ কি সুখে ? 曾 অধ্যাপক পুঁথিপত্র যা চাই তাই পাই। বিদ্যের মধ্যে তলিয়েই চলেচি। সুখের কথা বলচ, সে কথা মনেও নেই। পুরাণবাগীশ তবে ? অধ্যাপক নেশা । জানার পর জানা, তার পরে জানা, নেশার অন্ত নেই। পুরাণবাগীশ ওকেও সেই নেশা জোগাচ্চ ? অধ্যাপক এতদিন ত তাই চলছিল কিছুদিন থেকে হঠাৎ ক্ষেপে উঠে বলতে সুরু করেচে, “কিছুই কোথাও পেচচ্চে না।” আমি ওকে বলি, “নেশা কি কোথাও পৌঁছয়, শুধু এগোয়।” পুরাণবাগীশ হঠাৎ কেন এমন হল ? অধ্যাপক ও বলে, “বস্তুবিদ্যার অন্দরমহলে সিঁধ কাটচ ;– একটা দেয়াল ফুটো করা যেই সাঙ্গ হয় আরেকটা দেয়াল বেরিয়ে পড়ে। দেখাও, কোনখানে আছে প্রাণপুরুষ।” হাঁপিয়ে উঠে বলে, “তাকে ছিনিয়ে আনতে চাই।” পুরাণবাগীশ বাসরে। এ মানুষটা যে বিদ্যের গঠিকাটা ! যদি সাধ্য থাকত তাহলে বিশ্বের কেীটো সাতখানা করে ভেঙে তার ভিতরকার তত্ত্বরত্নটি নিজের থলির মধ্যে ভর্তি করত। অধ্যাপক চোর যেমন রাজভাণ্ডারের তালায় নানান চাবী লাগিয়ে পরখ করে, ও তেমনি জ্ঞানের নানা কুলুপ নিয়ে কেবলি নাড়াচাড়া করচে। পৃথিবীতে যত প্রাণী আছে সবগুলো কেটেকুটে প্রাণরহস্য যদি উদ্ধার হত ওর তাতে