পাতা:রক্তকরবী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8@S。 মাঝে প্রচণ্ড হয়ে উঠচেন— আমাদেরই কাছে যেতে ভয় হয়। এত বাড়াবাড়ি করচেন যে, খুব একটা ক্লাস্তি আসবার সময় আসচে। মেজ সর্দার এসব মানুষের ক্লাস্তি তাদের শক্তির চেয়ে ভয়ঙ্কর- সতর্ক হতে হবে । সর্দার বুঝতে পারচি একটা সঙ্কটের সময় আসচে। মানুষ যখন দুৰ্ব্বল হয়ে পড়ে তখনি ভালোমন্দ নিয়ে তার বিচারবুদ্ধি জাগে। রাজার মগজে তারি একটু আমেজ দেখা যাচ্চে, যদিও সেটা স্পষ্ট করতে তাঁর খুব লজ্জা হয়। কিন্তু আমি বিপ্লবের গন্ধ পাচ্চি । মেজো সর্দার শুধু রাজারই মধ্যে ছটফটানি দেখচি তা নয় আমাদের কারিগরদেরও কিসে মাতাচ্চে। হাওয়ায় একটা ভূতের আবির্ভাব। _ সর্দার . ভূত একদিন রাজাকে পেতে পারে, তোমার উপরেও তার দৃষ্টি আছে। কিন্তু ভূত ছাড়াবার ভার আমি নিলুম, আর রইল আমাদের ছোট সর্দার আর মোড়লদের পরে। মেজো সর্দার ঐ যে নন্দিনী আসচে। সর্দার আমার সময় নেই, মেজো সর্দার, তুমি ওর সঙ্গে যদি কথা কইতে চাও ত কও ৷ মেজো সর্দার না, আমার সময় আরো কম। আমি চলুম। প্রস্থান صح || مح WS) মধ্যে সুহৃদ বলে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরতে হয় তখন কোনো তীর্থের জলেই স্নান করে নিজেকে শুচি বলে বোধ হয় না। সর্দার রক্তের মধ্যে কার যে কি লুকিয়ে থাকে আর কখন যে তা কি আকারে বেরিয়ে পড়ে তার কোনো ঠিকানা নেই। কিছুদিন থেকে স্পষ্টই বোঝা যাচ্চে আমাদের রাজার রক্তের মধ্যে একটা অরাজকতার বীজ লুকিয়ে আছে। মেজো সর্দার তা যদি বল তবে একথা মানতেই হবে ঐ অরাজকতার বীজ মানুষ মাত্রেরই মনে আছে। ঐটেই হল প্রাণের বীজ। সরাজকতার পাথরের দেয়াল চিরকাল সমানভাবে খাড়া থাকত যদি অরাজকতা তার ফাঁসের মধ্যে দিয়ে অঙ্কুরিত হয়ে তাকে মাঝে মাঝে ফাটিয়ে না ফেলত। সর্দার আমরা আছি ঐ পাথরের দেয়ালের পক্ষে ।